আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে কি ভাবছেন ও কি করছেন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা? এসব খবর নিয়ে ধারাবাহিক রিপোর্টের প্রথম পর্বের আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করছি পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)’র কার্যক্রম ও তাদের নির্বাচনি ভাবনা-
পাহাড়ি জনগোষ্ঠির অধিকার আদায় নিয়ে কথা বলার ছাত্র সংগঠনের নাম হচ্ছে ‘পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)’। পিসিপি তাদের মূল ধারার সংগঠন আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা’র নেতৃত্বধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন ভোটের মাঠে। এবার ২৯৯ রাঙামাটি আসনের জন্যে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও বর্তমান সাংসদ ঊষাতন তালুকদার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিংহ মার্কায় লড়ছেন ভোটের মাঠে। তার সমর্থনে জেলার বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ, মাইকিং, পোস্টারিংসহ বিভিন্ন প্রচারণা মূলক কর্মকান্ডের কাজ করছেন বলে জানালেন এ ছাত্র সংগঠনের জেলার নেতৃবৃন্দ।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) রাঙামাটি জেলার সভাপতি রিন্টু চাকমা বলেন, সংসদে পার্বত্যবাসীর অধিকারের বিষয় উপস্থাপন করতে এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে নিজেদের মানুষ প্রয়োজন। চুক্তি স্থায়ীভাবে বাস্তবায়ন করার জন্যও নিজেদের মানুষ দরকার এটা পার্বত্যবাসী বুঝে গেছে। বিগত সময়ে আমরা অনেক-কে সর্মথন দিয়ে সংসদে পাঠিয়েছি, কিন্তু বাস্তব অর্থে আমাদের কোন অধিকার নিয়ে তারা সংসদে কথা বলেনি। তাই আমাদের অধিকার বাস্তবায়ন হয়নি। পার্বত্যবাসী বুঝে গেছে নিজেদের মানুষ ছাড়া অন্য কেউ আমাদের কথা সংসদে বলবে না। তাই গত নির্বাচনে পাহাড়ের মানুষ ঊষাতনকে যেভাবে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে এবারও তারা সিংহ মার্কায় ভোট দিয়ে আবারও নির্বাচিত করবে।
‘জনগণ আওয়ামীলীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে’ এমন মন্তব্য করে ছাত্র সংগঠনের এই নেতা বলেন, গত বেশ কয়েকবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী দীপংকর তালুকদার নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু তিনি পার্বত্য জেলার জন্য কি করেছে তা আমরা সকলে জানি। জনগণ বোকা নয়, তারা বুঝে গেছে কাকে তাদের প্রয়োজন, তাই জনগণ এখন আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে রিন্টু চাকমা বলেন, লংগদুতে পাহাড়ি জনবসতিতে আগুনসহ রাঙামাটি বেশ কয়েকটি ঘটনা দেখলে আমরা দেখতে পাই এদের হাতে পাহাড়ি জনগোষ্ঠি কি ভাবে নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছে। তাই পাহাড়ি জনগোষ্ঠির লোকেরা ৩০ ডিসেম্বর সিংহ মার্কায় ভোট দিয়ে এই নির্যাতন ও নিপীড়নের জবাব দিবে শাসকগোষ্ঠিকে।
আসন্ন নির্বাচনের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের দিন প্রতিটি কেন্দ্রে আমাদের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবকরা থাকবে। তাই কোন ধরণের সমস্যা সৃষ্টি হলে আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে মোকাবেলা করবো।
রাঙামাটি জেলা পিসিপির সাধারণ সম্পাদক মিলন কুসুম তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, আমাদের প্রার্থী আগেও একবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে পার্বত্যবাসীর ভোটে ও ভালোবাসায় নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি এবারও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। তাই আমরা আশাবাদী এবারও পার্বত্যবাসীর ভালোবাসায় এবং ভোটে তিনি নির্বাচিত হবেন। তিনি আরও বলেন, আমরা বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে প্রচারণামূলক সভা-সমাবেশ করছি। ঊষাতনের প্রয়োজনীয়তা কেনো তা আমরা তুলে ধরছি সাধারণ মানুষের মাঝে।
রাঙামাটি জেলা পিসিপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক পলাশ চাকমা বলেন, আমাদের প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ, প্রচার-প্রচারণা চলছে। এসব কাজে আমাদের পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা ক্লান্তিহীন কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমরা সংঘাতের পক্ষে নই। আমরা সম্প্রতি ও শান্তির পক্ষে। এই জন্যই পাহাড়ের মানুষ আমাদের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবে। তিনি আরো বলেন, আমরা আশা করি নির্বাচনে পাহাড়ে বসবাসরত জনগোষ্ঠি আমাদের প্রার্থী ঊষাতন তালুকদারকে সিংহ মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে পাহাড়ের শান্তি বজায় রাখার জন্য এবং পাহাড়ের মানুষের সার্বিক উন্নতি ও অধিকার আদায়ের কথা বলার সুযোগ দিবে। সাথে চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য ঊষাতন তালুকদারকে বেছে নিবে জনগণ।