দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা বন্ধকালিন সময়ে নির্ধারিত ও নিয়মিতভাবে হ্রদের জেলেদের জন্য খাস্যশস্য বরাদ্ধ দেয়া হচ্ছেনা অভিযোগ করে, মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন,সমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে জেলেরা।
বৃহস্পতিবার রাঙামাটির লংগদু উপজেলা পরিষদের সামনে অনুষ্ঠিত হয় এই কর্মসূচী। লংগদু একতা মৎস্যজীবি ব্যবসায়ী কল্যাণ সমবায় সমিতি লিমিটেড এর ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচীতে লংগদু একতা মৎস্যজীবি ব্যবসায়ী কল্যাণ সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি ইমাম হোসেন এর সভাপতিত্বে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায়, সাধারন সম্পাদক মো. কামাল উদ্দিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক আলা উদ্দিন এবং জেলা যুবলীগ নেতা শাহ মোহাম্মদ নজরুল ইসলামসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে জেলেরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা বন্ধের সময়ে দুঃস্থ ও প্রকৃত জেলে পরিবারের মাঝে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্তৃক ভিজিএফ’র ৪০ কেজি চাউলের বিপরীতি প্রতি মাসে ১০ কেজি করে চাউল বরাদ্দের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তারা আরো বলেন, সমগ্র বাংলাদেশে মৎস্য প্রজনন মৌসুমে ৩ মাস জেলেদের বিশেষ বিজিএফ এর মাধ্যমে সহযোগিতা প্রদান করা হয়। সে সকল এলাকার জেলেদের ত্রাণ সহায়তা হিসেবে প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে দেয়া হয় কিন্তু রাঙামাটি জেলার জেলেদের জন্য প্রতি মাসে ১০ কেজি করে ত্রাণের চাউল বরদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এই বৈষম্য দূর করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাউল বরাদ্দে দাবি জানানো হয়।
লংগদু একতা মৎস্যজীবি ব্যবসায়ী কল্যাণ সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি ইমাম হোসেন বলেন, ‘গত বছর সারা দেশে বন্যার কারনে আমাদের চাউল দেওয়া হয়নি। আমরা বিষয়টি মেনেও নিয়েছিলাম। কিন্তু এবছর ৪০ কেজির পরিবর্তে ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ হয়েছে। কমপক্ষে ৩০ কেজি করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বরাদ্দ না হলে হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচীর ঘোষনা দেওয়া হয় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা থেকে।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা শেষে লংগদু উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মরকলিপি পেশ করা হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৬০ সালে প্রমত্তা কর্ণফুলি নদীতে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হলে পানির নীচে তলিয়ে যায় রাঙামাটি শহরসহ প্রায় এক লক্ষ একর বিস্তৃত এলাকা। তৈরি হয় কাপ্তাই হ্রদ আর উদ্বাস্তু হয় লক্ষাধিক মানুষ। এরপর ৭৫৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সুবিশাল কাপ্তাই হ্রদের পাড়ে গড়ে উঠে রাঙামাটি শহর ও বিভিন্ন উপজেলা। আর এই হ্রদে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে কয়েক হাজার জেলে। কিন্তু প্রতি বছর হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন বাড়াতে পোনা ছাড়ে হ্রদটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ মৎস উন্নয়ন কর্পোরেশন। এসময় তিন মাস হ্রদে সকল প্রকার মাছ আহরণ,বিপনন,বাজারজাতকরণ বন্ধ রাখে স্থানীয় প্রশাসন। বন্ধকালিন সময়ে জেলেদের জন্য বিশেষ খাদ্য সহায়তা কর্মসূচী চালু করা হয় বছরকয়েক আগে। কিন্তু সর্বশেষ ২০১৭ সালে এই বরাদ্দ পায়নি জেলেরা। এই বছর ইতোমধ্যেই দুইমাস পেরিয়ে গেলেও এখনো বরাদ্ধ পৌঁছায়নি তাদের হাতে।
1 Comment
জাতে চাল বেচে কারেন্ট জাল কেনা য়ায়