জাকির হোসেন, দীঘিনালা
খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালার হাজাপাড়ায় শুকনো মৌসুমে পানির জন্য হাহাকার শুরু হয়। বর্ষাকালে ছড়া ও কুয়ার পানি ভরসা হলেও শুকনা মৌসুমে ছড়া শুকিয়ে যাওয়ায় পানির কষ্টের অন্ত থাকেনা পাড়াবাসীর। এছাড়াও হাজাপাড়াবাসী সরকারের পর্যাপ্ত সুবিধা না পাওয়ারও অভিযোগ করেছেন। এলাকাটি উপজেলার ১ নম্বর মেরুং ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিষ্ণুকার্বারি পাড়া এলাকার হাজাপাড়া। পাড়াটিতে ১০৫ পরিবারের বসবাস। প্রায় সকলেই জুম চাষের ওপর নির্ভরশীল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পাড়ায় পৌঁছাতে দীর্ঘপথ; শুধু পায়ে হাটার নাম মাত্র সড়ক। সড়ক নির্মাণের কোন কাজই করা হয়নি কখনো। এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় নির্বাচনের সময় ২-১জন জনপ্রতিনিধি গেলেও পরে আর সে পাড়ার কোন খোঁজখবর রাখেন না কেউ।
হাজাপাড়ার কলেজ শিক্ষার্থী হগকান্তি ত্রিপুরা (২০) জানান, পুরো পাড়ায় কোন নলকূপ নেই। পাথুরে পাহাড় বলে ধারে কাছে নলকূপ স্থাপনও করা যায়না। এ মৌসুমে পাড়ার পানির উৎস ছড়ার তলদেশে তৈরি করা ছোট একটি গর্ত। সেটিকে তিনি সিমেন্টের তৈরি একটি রিং দিয়ে ঘিরে রেখেছেন আবর্জনা থেকে রক্ষা করতে। সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করতে সারাদিন লাইন ধরেন এলাকাবাসী। হগকান্তির দাবি, সরকারি বা কোন বেসরকারি সংস্থা রিংওয়েল স্থাপন করে দিলে তাদের পানির কষ্ট দুর হতো। কারণ দরিদ্র পাড়াবাসীর দ্বারা সে নির্মাণ ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়।
সরকারি সুুবিধা থেকেও বঞ্চিত বলে অভিযোগ পাড়ার কার্বারি (পাড়াপ্রধান) গনীরঞ্জন ত্রিপুরার (৪৮)। গনীরঞ্জন জানান, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, পঙ্গু ভাতা, ভিজিএফ, ভিজিডির সুবিধা খুব একটা পাননা তারা। হাতেগোনা ১-২টি বয়স্ক ভাতা থাকলেও অনেক বয়স্ক লোক রয়েছেন ভাতাবঞ্চিত। গনীরঞ্জন ত্রিপুরার মা চন্দ্র লেখা ত্রিপুরার বয়স ৮০ বছর কিন্তু পান না ভাতা, এরকম অনেকেই রয়েছেন। ৮৫ বছর বয়স্ক নিরবালা ত্রিপুরার ছেলে পতিনলাল ত্রিপুরা (৪৫) জানান, তাঁর মা-ও ভাতা পান না।
নবনির্বাচিত সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার ভুবন মোহন ত্রিপুরা জানান, হাজাপাড়ায় কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এবং সরকারি সুবিধা থেকেও বঞ্চিত পাড়াবাসি। তিনি মাত্রনির্বাচিত হয়েছেন, দায়িত্বগ্রহণের পরে প্রথম হাজাপাড়ার উন্নয়নে কাজ করবেন।