ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই ॥
সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে প্রায় ১১শত ফুট উপরে পাংখোয়া পাড়া। মাত্র ১৮টি পাংখোয়া পরিবার এবং চারটি তঞ্চঙ্গ্যা পরিবারের বসবাস এই পাড়ায়। কাপ্তাই উপজেলার কাপ্তাই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের এই পাড়ার সব শেষ চূড়া হতে দেখা মিলে অনিন্দ্য সুন্দর পাহাড়ের রূপ মাধুর্য্য। সবুজ বন বনানী আর কাপ্তাই লেকের অপরূপ সৌন্দর্য মিলবে এইখানে। সহজ সরল যেমন এইখানকার মানুষ গুলো ঠিক তেমনি বৈচিত্র্যময়ে ভরপুর তাদের সংস্কৃতি। বিশেষ করে এই এলাকার পাংখোয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যমন্ডিত গীত, বাদ্য, নৃত্য পরিবেশন যে কাউকে মুগ্ধ করবে।
সেইদিন ছিল ১৯ জানুয়ারি বুধবার। সেই পাড়ায় প্রথম কোনও প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তার(ইউএনও) প্রথম আগমন। স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী। অবশ্যই সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন, উঠান বৈঠক এবং অসহায়দের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য ইউএনও যান সেই এলাকায়। এইসময় চন্দ্রঘোনা মিশন হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রবীর খিয়াং, কাপ্তাই থানার ইনচার্জ জসিম উদ্দিনসহ সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, হেডম্যান ও কার্বারিরা ছিল সেই পরিদর্শনে। তাদের সম্মানে পাংখোয়া পাড়া যুবক যুবতীরা আয়োজন করেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ করে পাংখোয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী বাঁশ নৃত্য ও ‘সালু মালাম’ নৃত্য অর্থাৎ ‘পশু মাথা নৃত্য’ পরিবেশনায় মুগ্ধ হন আগত অতিথিরা। সেই সাথে পাংখোয়া সম্প্রদায়ের গানও অকুন্ঠ প্রশংসা অর্জন করে উপস্থিত দর্শকদের। তাইতো অনুষ্ঠান শেষে কাপ্তাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ হতে শিল্পকলার সভাপতি ইউএনও মুনতাসির জাহান তাদের আর্থিক সহায়তা দেন এবং তাদের সংস্কৃতি বিকাশে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। এইছাড়া চন্দ্রঘোনা মিশন হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রবীর খিয়াংও তাদের সহায়তা প্রদান করেন।
লালরিন পাংখোয়া এবং লিলি পাংখোয়ার প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় সেইদিন এই মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বে অংশ নেন লালদেং পাংখোয়া, লিলি পাংখোয়া, রুবি পাংখোয়া, ভানরামপার পাংখোয়া লালরিনদিক পাংখোয়া, লালরিন পাংখোয়া, লালরোয়াত পাংখোয়া, জৌরামথাং পাংখোয়া, ইউনিট পাংখোয়া, লালরিসান পাংখোয়া, লালজেক পাংখোয়া, লাশমি পাংখোয়া, সালেম পাংখোয়া, রেবেকা পাংখোয়া, মালসমপার পাংখোয়া, জাইথানপার পাংখোয়া, সোমথিয়াং পাংখোয়া, সাংভর পাংখোয়া, লালময় পাংখোয়া ও চোয়ানজুয়াম পাংখোয়া।