
শুভ্র মিশু
‘ভূ-গর্ভস্থ পানি: অদৃশ্য সম্পদ, দৃশ্যমান প্রভাব’ এই প্রতিপাদ্যে এবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব পানি দিবস। পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে এখনো ৩৪ শতাংশ মানুষ পাচ্ছেন না সুপেয় পানি। বিশেষ করে শুষ্ক ও বর্ষা মৌসুমে এই সুপেয় পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা সুপেয় পানির এই সংকট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন।
জেলার দুর্গম উপজেলাগুলোতে শুষ্ক ও বর্ষা মৌসুমে তীব্র পানি সংকট দেয়। এতে পাহাড় চূড়ায় বসবাস করা মানুষকে কয়েক ফুট নিচে নেমে পানীয় জল সংগ্রহ করতে হয়। আবার বর্ষা মৌসুমে কুয়াগুলোতে ময়লা পানি প্রবেশ করায় তখন সুপেয় পানি সংকট আরও তীব্র হয়। সে সময়ে বৃষ্টির পানিই একমাত্র ভরসা হয় এসব এলাকার মানুষের। আবার এসব এলাকায় পাথরের সংখ্যা বেশি হওয়ায় গভীর নলকূপ বসানো সম্ভব হয়ে উঠেনা।
এমন পরিস্থিতিতে পানির সংকট নিরসনে বড় আকারের কুয়া তৈরি এবং বর্ষায় এসব কুয়ায় ময়লা না প্রবেশের ব্যবস্থা করে সেসব কুয়া থেকে বিভিন্ন এলাকায় পাইপ দিয়ে পানি সরবরাহ করা হলে এই পানি সংকট কিছুটা লাঘব হবে বলে মনে করছেন পানি সংকটে থাকা দুর্গম এলাকার মানুষেরা।
২০১১ সালের আদমশুমারীর তথ্যানুসারে, রাঙামাটির জনসংখ্যা ৬ লাখ ২০ হাজার ২১৪ জন।রাঙামাটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৬ শতাংশ মানুষের। দুর্গম এলাকাগুলোতে মাটির নিচে পাথর পড়ায় গভীর নলকূপ বসানো সম্ভব হয় না।
জেলার জুরাছড়ি মৈদং ইউনিয়নের বাসিন্দা সুমন্ত চাকমা জানান, শুষ্ক ও বর্ষা মৌসুমে প্রচুর খাবার পানি সংকট দেখা দেয়। অনেক দূর থেকে আমাদের খাবার পানি সংগ্রহ করে আনতে হয়। আর বর্ষায় কুয়ার পানি ময়লা পড়ে নষ্ট হওয়ায় তখন পানির একমাত্র ভরসা থাকে বৃষ্টির পানি।
মৈদং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রহিনী কুমার কার্বারি জানান, শুষ্ক ও বর্ষা মৌসুমে আমাদের এলাকায় তীব্র খাবার পানি সংকটে দেয়া দেয়। দুই একটা জায়গায় নলকূপ বসানো হলেও তা অপ্রতুল। এখানে বড় বড় কুয়ার ব্যবস্থা করতে হবে যাতে কুয়ায় পানি জমা হলে তা পাইপ দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা যায়।
জুরাছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা জানান, আমাদের এলাকায় বিশেষ করে মৈদং, দুমদুম্যা ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি খাবার পানি সংকট দেখা যায় এই মৌসুমে। তবে কিছু কিছু জায়গায় নলকূপ বসানো হচ্ছে।
এদিকে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বেথাকা রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য বিপুল ত্রিপুরা জানান, রাঙামাটি জেলায় সুপেয় পানির ব্যবস্থার জন্য আমরা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ৪৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাঠিয়েছি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বরাদ্দ পাওয়া গেলে আশা করছি সুপেয় পানির আর সংকট থাকবে না।