বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি ॥
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার খেদারমারা ইউনিয়নের পাবলাখালী এলাকায় পাওনা টাকা নিয়ে সালিশে কথা কাটাকাটির জেরে খেদারমারা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও জনসংহতি সমিতির ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি রুপেল বিকাশ চাকমা এবং জনসংহতি সমিতির যুব সমিতির নেতা শুদ্ধধন চাকমা মিলে একই এলাকার চিক্কো চাকমাকে(৩৪) বেদম মারদর করে মারাত্মক আহত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মারধরের শিকার চিক্কো চাকমাকে বাচাঁতে এগিয়ে এসে হামলার শিকার হয়ে আহত হয়েছে সন্তোষ চাকমা নামে আরো এক স্থানীয় যুবক।
মারাত্মকভাবে আহত যুবক চিক্কো চাকমা খেদারমারা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাবলাখালী গ্রামের চিরঞ্জীব চাকমার ছেলে বলে জানিয়েছেন খেদারমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিল্টু চাকমা।
মারধরের বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউপি চেয়ারম্যান বিল্টু চাকমা বলেন, শুনেছি ৫০ হাজার টাকা লেনদেন নিয়ে এলাকার কারবারি বিশ্ব প্রিয় চাকমার নিকট বাদি শান্তি বিকাশ চাকমা একটি লিখিত অভিযোগ করেন। কারবারি বিশ্ব প্রিয় চাকমা অভিযোগপত্রটি এলাকার মেম্বার রূপেল বিকাশ চাকমার কাছে সুরাহার জন্য হস্তান্তর করেন।
গত শুক্রবার বিকাল সাড়ে তিনটায় সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন ইউপি সদস্য রূপেল বিকাশ চাকমা, এসময় ইউপি সদস্যের নিজস্ব বিচার বিভাগের সদস্য জনসংহতি সমিতি সমর্থিত যুব সমিতির ৯ সদস্য উপস্থিতও ছিলেন। এবং সালিশ বৈঠক চলাকালীন কথা-কাটাকাটির জেরে বাদি শান্তি বিকাশ চাকমাও মেম্বার রূপেল বিকাশ চাকমাসহ কমিটির সবাই মিলে চিক্কো চাকমাকে মারধর করেছে বলে জানিয়েছেন। সন্তোষ চাকমা নামে আরেকজন এসময় আহত হয়।
এছাড়াও ঘটনার সময় উপস্থিত রিপন চাকমা বলেন, সবাই মিলে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে চিক্কো চাকমার ওপর। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থার অবনতি দেখে জরুরিভাবে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠায় কিন্তু ঘন ঘন রক্ত বমি করায় খাগড়াছড়ি হাসপাতাল থেকে রাত আটটায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় চট্টগ্রাম মেডিকেলে।
অভিযুক্ত মেম্বার রূপেল বিকাশ চাকমা মোবাইল ফোনে নিজে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন বাদী-বিবাদী আপন মামা ভাগিনা। মুলত সুদের ১ লক্ষ ৫৫ টাকা নিয়ে মারামারির সূত্রপাত। সালিশে দুজনের কথা-কাটাকাটি ও ৫৫ হাজার টাকা পরিশোধের বিষয়টি অস্বীকার করা নিয়ে নিজেরাই মারামারিতে লিপ্ত হয় এখানে আমার কোন হাত নেই।
রোগীর সাথে থাকা সিন্ধু বিকাশ চাকমা বলেন, এখনো চিক্কো চাকমার জ্ঞান ফেরেনি তার জীবন সংকটাপন্ন আমরা চট্টগ্রামের পথে রয়েছি তাই থানায় এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ দিতে পারিনি, পরে সুবিধাজনক সময়ে চিহ্নিত অপরাধীদের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করা হবে।
বাঘাইছড়ি থানার ওসি আনোয়ার হোসেন খান বলেন, বিষয়টি আমরা নজর রাখছি, অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।