সুহৃদ সুপান্থ
রাষ্ট্রপতির অবকাশযাপনে আসার কারণে পার্বত্য রাঙামাটির মেঘের উপত্যকা খ্যাত পর্যটনকেন্দ্র সাজেকের সব রিসোর্ট-কটেজ বন্ধ থাকার যে সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়েছে,সেটি ঠিক নয় জানিয়ে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলছেন-‘ সাজেকের সব রিসোর্ট-কটেজ খোলা থাকবে। সেখানে কিছু কটেজ রিসোর্টে রাষ্ট্রপতির প্রটোকলে নিয়োজিতরা এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারিরা থাকবেন,বাকি সব রিসোর্ট কটেজ পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাজেক রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক জেরি লুসাইও জানিয়েছেন, ‘আমাদের প্রায় শতাধিক কটেজে ৩ হাজারের মত পর্যটক থাকতে পারে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায় তিনশ মানুষের থাকার জন্য রুম চাওয়া হয়েছে। বাকিসব রুম ও কটেজে পর্যটকরা থাকতে পারবে বলে জানানো হয়েছে আমাদের। একইসময় দীঘিনালা থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার নিরাপত্তাবাহিনীর যে নিয়মিত কার্যক্রম সেটাও চলমান থাকবে বলে জানানো হয়েছে ।
এর আগে বৃহস্পতিবার সাজেকে ‘খাস্রাং রিসোর্ট’-এ অনুষ্ঠিত এক সভায় ৯ থেকে ১৪ মে রাষ্ট্রপতির সাজেক আগমন উপলক্ষ্যে কটেজ রিসোর্ট মালিক,স্থানীয় জনপ্রতিনিধি,আইনশৃংখলাবাহিনীর কর্মকর্তারা ওই সময় সাজেককে সুন্দর ও সুশৃংখল রাখতে সবার সহযোগিতার উপর জোরারোপ করেন। এই সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানসহ জেলার বিভিন্ন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক জেরি লুসাই আরো বলেন,‘ রাষ্ট্রপতি সাজেক আসছেন,এটা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের সংবাদ। তার আগমনে সাজেকের পর্যটনের আরো ব্যাপক প্রচার ও প্রসার ঘটবে। আমরা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে তার সফরকে সুন্দর ও স্মরণীয় করতে কাজ করছি।’
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানিয়েছে, ‘১১ থেকে ১৪ মে ৪ দিন সপরিবারে সাজেক অবস্থান করবেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ। রাষ্ট্রপতির সফরকে নিরাপদ রাখতে সবধরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন।’
ডিসি জানিয়েছেন, ‘ রাষ্ট্রপতির প্রটোকলে নিয়োজিতদের থাকার জন্য বেশ কিছু রুম বাদে বাকি সব কটেজ রিসোর্টেই পর্যটকরা থাকতে পারবেন।’
‘সাজেক বন্ধ থাকবে’-এমন খবর সত্য নয় জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন,বন্ধ করার কোন সিদ্ধান্ত হলে তো আমরা গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্টদের অফিসিয়ালিই জানাতাম।’
প্রসঙ্গত,বিভিন্ন গণমাধ্যমে রাষ্ট্রপতির সাজেক সফরের কারণে ৯ থেকে ১৪ মে, ছয়দিন পর্বতকণ্যা সাজেকের সব রিসোর্ট ও কটেজ বন্ধ থাকবে বলে সংবাদ প্রকাশ করে কিছু গণমাধ্যম। মূলতঃ বৃহস্পতিবার সভার পর সাজেক কটেজ মালিক সমিতির ফেসবুক পেজের একটি পোস্টের কারণেই বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
উল্লেখ্য,আয়তনে দেশের সবচে বড় উপজেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে অবস্থিত ‘বাংলাদেশের দার্জিলিং’ খ্যাত নয়নাভিরাম সাজেক। মিজোরাম সীমান্তবর্তী এই এলাকায় সড়কপথে প্রতিবেশী জেলা খাগড়াছড়ির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোকে বিপুল সংখ্যক দেশী পর্যটকের অনিবার্য গন্তব্য হয়ে উঠছে মেঘ পাহাড়ের এই ছোট্ট জনপদ।