সরকারি প্রকল্পের নামে সরকারী টাকায় ব্যক্তিগত পুকুর রক্ষার কাজ করাচ্ছেন এক ইউপি সদস্য। শুক্রবার বিভিন্ন চলমান কাজের তদারকি করতে সরেজমিনে গিয়ে এমন অবস্থা দেখে বিস্মিত হয়েছেন খোদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
ঘটনাটি খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার ১নম্বর মেরুং ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাচাঁ মেরুং এলাকায়। এ কাজের প্রকল্প চেয়ারম্যান সংশিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার শাহ আলম ভুঁইয়া ওরফে সজিব নিজেই।
জানা যায়, ২০১৭Ñ২০১৮ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন (টিআর) কর্মসূচির আওতায় সাধারণ ও উন্নয়ন খাতে (২য় পর্যায়) ‘৪ নং ওয়ার্ডে জাবেদ আলীর বাড়ি হতে কাশেমের বাড়ি পযর্ন্ত মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ’ নামের প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণ ১ লাখ ১৮ হাজার ২১৫ টাকা। যার প্রথম কিস্তির টাকা উত্তোলন করা হয়েছে আরো আগেই।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পে কাজ পরিদর্শন করতে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কথা বলছিলেন স্থানীয়দের সাথে। এসময় স্থানীয় হুমায়ুন করিব (৩৫) জানান, এ সড়কে মাস দুয়েক আগে কর্মসৃজন প্রকল্পের আওতায় নারী শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো হয়েছিল। এর পর এ সড়কে আর কোন কাজ করানো হয়নি। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে সাথে উপস্থিত থাকা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সহকারী স্মৃতি চাকমা ফোন দিলে হাজির হন প্রকল্প চেয়ারম্যান শাহ আলম ভুঁইয়া সজিব। হম্বি-তম্বি করে এসে সজিব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সকলের সামনে বলেন, ‘স্যার কাজ চলতেছে শ্রমিক আছে,সামনে চলেন দেখবেন’।
৪/৫’শ গজ সামনে গিয়ে দেখা যায়, বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়া একটি পুকুরের পাড় মেরামত না করে বরং সে এ পুকুরের মাছ রক্ষার জন্য বাঁশ দিয়ে বেড়া তৈরীর কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। তখন স্থানীয়রা জানান, এ পুকুরটিও মেম্বার সজিবের।
এ কথা শুনে এবং প্রকল্পে নাম অনুযায়ী কোথাও কোন কাজ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তখন প্রকল্প অনুযায়ী ১ সপ্তাহের মধ্যে কাজ সম্পাদন করার মৌখিক অঙ্গিকার দেন মেম্বার সজীব।
তবে সজিব দাবী করেন, পুকুরটি তাঁর হলেও এ পুকুরের পাড় দিয়ে অনেক মানুষের যাতায়াত তাই তিনি পুকুরের ভেঙ্গে যাওয়া পাড়ও প্রকল্পের টাকায় মাটি দিয়ে মেরামত করে দিবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকার উন্নয়নের সার্থে কাজ আদায় করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। যে সমস্ত প্রকল্পের কাজ এখনো করা হয়নি সে সব প্রকল্পের অনুকুলে বরাদ্দকৃত অর্থ/খাদ্যশস্য ছাড় না দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’