পাহাড়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজির বিরুদ্ধে আজ রাঙামাটিতে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে সচেতন নাগরিক সমাজ। মুলত আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সব দলের নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণসহ অস্ত্রবাজি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নেয়ার লক্ষ্যে সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে গত কয়েকদিন ধরে শহরে চলছে মাইকিং, চলছে গণসংযোগও। এদিকে মহাসমাবেশ নিয়ে জনমনেও দেখা দিয়েছে শঙ্কা। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন।
গত ৫ ডিসেম্বর রাঙামাটির জুরাছড়িতে আওয়ামীলীগ নেতা অরবিন্দু চাকমাকে গুলি করে হত্যা, একইদিন বিলাইছড়িতে আওয়ামীলীগ নেতা রাসেল মারমার ওপর হামলা করে দৃর্বৃত্তরা। এসব ঘটনার প্রতিবাদে পরদিন রাঙামাটি শহরে আওয়ামীলীগের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখার অপরাধে ঐদিন রাতে নিজ বাসায় মারাত্মক হামলার শিকার হয় জেলা মহিলালীগের সহ-সভাপতি ঝর্ণা খীসা। এসবের প্রতিবাদে জেলা যুবলীগের উদ্যোগে হরতালও পালিত হয়। এখানেই থেমে থাকেনি ঘটনা। উপজেলার যেসব পাহাড়ি নেতাকর্মী আওয়ামীলীগে রয়েছে, তাদের পদত্যাগের জন্য ১৬ ডিসেম্বর সময় বেঁধে দেয়া হয়। এরই মধ্যে জুরাছড়ি ও বিলাইছড়িতে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী পদত্যাগও করে। অনেকেই হয়েছেন এলাকাছাড়া। আওয়ামীলীগের পাহাড়ি নেতাকর্মীদের ওপর হঠাৎ এমন হামলায় হতভম্ব হয়ে পড়ে দলটি। তারা এসব ঘটনার জন্য শুরু থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(জেএসএস)কে দায়ি করে আসলেও জেএসএস বরাবরই তা অস্বীকার করেছে। এরই মধ্যে আওয়ামীলীগের আরো কয়েক নেতার ওপর হামলা চলে।
অনবরত আওয়ামীলীগ নেতার ওপর হামলার জবাব হিসেবে জেলা আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বর্ধিত সভার আয়োজন করে। গত ১৫ জানুয়ারি জেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীমসহ আরো কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অস্ত্রবাজির বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি ব্যক্ত করেন।
বর্ধিত সভার পরপরই জেলা নেতৃবৃন্দ সব দল, সাধারণ মানুষকে একই প্লাটফর্মে এনে মহাসমাবেশের পরিকল্পনা নেয়। সাধারণ মানুষের মধ্যে চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মহাসমাবেশের ডাক দেয়া হয়। দলীয় ব্যানারে না ডেকে সচেনতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে এই সমাবেশ পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে এলাকায়, এলাকায় গণসংযোগ চালিয়েছে নেতৃবৃন্দ। এছাড়া উপজেলা থেকেও সাধারণ মানুষ সমাবেশে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন কমিটির নেতৃবৃন্দ।
সচেতন নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি মুছা মাতব্বর বলেন, পাহাড়ে অব্যাহত সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজির বিরুদ্ধে এখন রুখে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিকল্প নেই। তবে আমাদের আন্দোলন গণতান্ত্রিক উপায়ে হবে।
কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সদস্য ও সচেতন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক দীপংকর তালুকদার বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান সকলের। তাই এটি কোনও দলীয় কার্যক্রম নয়। সকল জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায়ের লোকদেরকে এক সাথে নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্যে এই মহাসমাবেশের ডাক দেয়া হয়েছে। পাহাড় থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও চাঁদাবাজি বন্ধের সময় এসেছে।
কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সত্যজিৎ বড়–য়া জানান, মহাসমাবেশে নিরাপত্তা নিয়ে তেমন কোনো সমস্যা নেই। শান্তিপূর্ণভাবে মহাসমাবেশ শেষ করার জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। আশা করছি কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।
3 Comments
শুধু বিরোধিতার কাটিরে সব কিছু বিরোধিতা করলে বেশি ভালো লাগেনা । নিজের স্বার্থের জন্যে এ সব কিছু কর ভালো কথা !!!! জুম্ম জাতিকে উপকার করতে পারবা না মানলাম কিন্তু ক্ষতি করতে যাবা কেন ? সেটাতো মেনে নেয়া যায় না । তোমার মতো জাত বিরোধী , বেইমান , দালালিপনা লোকদের কারণে জুম্ম জাতি আজ দিন দিন সরাতলে যাচ্ছে । জুম্ম সার্থ পরিপন্থী সকল অপশক্তিকে আরো কঠোর হাতে দমন করা হোক । “দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য ঘোয়াল অনেক ভালো ” । প্রয়োজনে গুলি করে মাথার কুলি উড়িয়ে দাও ।
good
মহাসমাবেশ সুন্দর ও সফল হয়েছে ও সফল হয়েছে।