সুহৃদ সুপান্থ
নিজের রাজনৈতিক মিত্রদের বড় একটি গ্রুপকে সাথে নিয়ে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সর্বশেষ কমিটির সহসভাপতি,সাবেক রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা।
২৩ জুলাই শনিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় এই শ্রদ্ধা নিবেদনের কিছু ছবি ও একটি সংবাদ পাহাড়টোয়েন্টিফোর ডট কমের ইমেইলে আসার পর রবিবার যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন খোদ নিখিল কুমার চাকমা।
ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যম থেকে হাতে আসা ছবি ও ইমেইলে আসা সংবাদে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে নিখিল কুমার চাকমার সাথে ওই সময় উপস্থিত ছিলেন বলে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন-‘সাবেক জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য হাজী মো: কামাল উদ্দিন, সাবেক কমিটির সহ-সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, সাবেক জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ কুমার চাকমা, সাবেক জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জমির উদ্দিন, সাবেক জেলা কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মোঃ হানিফ, সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, সাবেক জেলা কমিটির ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন মোল্লা, সাবেক জেলা কমিটির উপ দপ্তর সম্পাদক জাকির হোসেন সেলিম, সাবেক জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সাবেক জেলা কমিটির সদস্য অমর কুমার তঞ্চগ্যা, সাবেক জেলা কমিটির সদস্য শফিকুর রহমান।’
নিখিল কুমার চাকমা পাহাড়টোয়েন্টিফোর ডট কমকে বলেন-‘এটি একটি অরাজনৈতিক কর্মসূচী। ওরা( নেতারা) আলাদা করে প্ল্যান করেছে এবং আমাকে বলেছে। আমিও সায় দিয়েছি। তারা একটি বাস,একটি মাইক্রো ও একটি কার নিয়ে গেছে,আমিও সেখানে গিয়েছি উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান হিসেবে। সেখানেই দেখা হয়েছে। যেহেতু আমরা সবাই একই দল করি এবং আমাদের আদর্শ একইসাথে শ্রদ্ধা নিবেদনও একটি স্বাভাবিক কর্মসূচী। এরা সবাই আমার অনুসারি নয়,আমরা একই দল করি।’
এর আগে আর কখনই রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে এইভাবে জাতির পিতার সমাধীতে শ্রদ্ধা নিবেদনের নজির নেই বলেও নিশ্চিত করেন নিখিল। তিনি বলেন- আমাদের প্রধান লক্ষ্যই ছিলো জাতির পিতার সমাধীতে ফুল দিতে যাওয়া। পথিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নির্মিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুও দেখা হলো সবার।’
যাওয়ার আগে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সম্পাদককে সাথে যাওয়ার জন্য বলেছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে নিখিল বলেন,এটাতো সাংগঠনিক কর্মসূচী নয়। কয়েকজন ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ নিয়েছেন,বাকিরা একমত হয়ে তাতে সামিল হয়েছে।’
নিখিল কুমার চাকমা বলেন, আমি আগেও জাতির পিতার সমাধীতে গিয়েছি,তবে পদ্মা সেতুর কারণে এখন সময় একেবারেই কম লেগেছে।’
নিখিলের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সমাধীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদানের পর নেতারা বঙ্গবন্ধুর কমপ্লেক্স’র অভ্যন্তরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগার ঘুরে ফিরে দেখেন।
এই পরিদর্শন সম্পর্কে কিছুই জানেন না জানিয়ে রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর বলেন,আমি এই সম্পর্কে কিছুই জানিনা। ফেসবুকে ছবি দেখিছি। কে উদ্যোগ নিয়েছে কারা কারা গেছে সেটাও জানিনা।’ তারা জানালে সাথে যেতেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘ বললে হয়ত ভেবে দেখতাম।’
প্রসঙ্গত,রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সর্বশেষ সম্মেলনকে ঘিরে স্পষ্ট হয়ে উঠে সংগঠনটির দুটি ধারার মধ্যকার বিরোধ। সভাপতি পদে দীর্ঘদিনের একচ্ছত্র অধিপতি দীপংকর তালুকদারকে চ্যালেঞ্জ করে প্রার্থীতা ঘোষণা করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেন সহসভাপতি নিখিল কুমার চাকমা। যদিও নির্বাচনের দিন কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপে সড়ে দাঁড়ান তিনি। আর সাধারন সম্পাদক পদে মুছা মাতব্বরের বিরুদ্ধে প্রার্থী হন সাবেক সেক্রেটারী হাজী কামাল। তিনি ভোটযুদ্ধে মুছার কাছে পরাজিত হন। সম্মেলনের পর নিখিল ও কামালের পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করা নেতারা অনেকদিন পর ফের একসাথে কোন কর্মসূচীতে মিলিত হলেন।