ডেস্ক রিপোর্ট ॥
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে শিক্ষার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিন পার্বত্য জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বাস্তবায়নযোগ্য হোস্টেলসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা উচিত। দুর্গম এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয় জনগণ, পার্বত্য জেলা প্রশাসন ও পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহকে উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি আরোও বলেন যে, তিন পার্বত্য জেলায় পূর্বে যেখানে স্কুল অবকাঠামো রয়েছে যদি সংস্কার কিংবা নতুনভাবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা দরকার সেখানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এবিষয়ে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনকে সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সহযোগিতা করার জন্য আহবান জানান। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার জিরোমাইলে ট্যুরিস্ট সাপোর্ট সেন্টার ন্যায় রাঙামাটি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলাতেও একই ডিজাইনে নির্মাণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ‘পরিচালনা বোর্ড’ এর ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের ৩য় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার সকালে বোর্ড সভা বান্দরবান ইউনিট কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বোর্ডের সদস্য প্রশাসন ইফতেখার আহমেদ (যুগ্মসচিব) বিগত পরিচালনা বোর্ড সভার কার্যবিবরণী পাঠ করে শোনান এবং গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিস্তারিত উপস্থাপন করেন। পরবর্তীতে বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীগণ কোড নং ২২০০১১০০, ২২০০০৯০০ এর আওতাধীন প্রকল্প/স্কিম এবং বোর্ডের আওতাধীন পরিকল্পনা কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকগণ ১৫ মার্চ ২০২১খ্রি. পর্যন্ত সময়ের সার্বিক বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন।
এছাড়া বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন খাগড়াছড়ি গিরিবিতানের দোকান ঘর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খালি করে পুনঃনির্মাণ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড তহবিল সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, উঁচুভূমি বন্দোবস্তীকরণ প্রকল্প, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে পরিকল্পনা কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা, তিন পার্বত্য জেলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র অন্যতম উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছানোর লক্ষ্যে সোলার বিদ্যুৎ প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অবতরণ ঘাটের পাশে লেক ভিউ পয়েন্ট স্থাপনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ, তিন পার্বত্য এলাকায় শিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে দুর্গম এলাকায় হোস্টেলসহ স্কুল নির্মাণ, কৃষি সেচ ও পানীয়জল সরবরাহকরণ ও যোগাযোগ খাতকে অগ্রাধিকার প্রদান, তিন পার্বত্য জেলায় হেডম্যান কার্যালয় নির্মাণের জন্য নক্সা প্রস্তুতকরণ ও প্রকল্প গ্রহণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ^াস বলেন যে, দুর্গম এলাকায় হোস্টেলসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণে অগ্রাধিকার দেয়া দরকার। দুর্গম এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ছেলে মেয়েরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আওতাধীন পাড়াকেন্দ্রে পাশাপাশি প্রাইমারী/মাধ্যমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করার জন্য তিনি অনুরোধ জানান। তিনি আরও বলেন যে, এসব দুর্গম এলাকায় স্কুল নির্মাণ করা হলে সুবিধা বঞ্চিত ছেলে-মেয়েরা আলোকিত হবে এবং শিক্ষান মান বৃদ্ধি পাবে। তিনি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার জিরো মাইলে ট্যুরিস্ট সার্পোট সেন্টার নির্মাণ করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান রাঙামাটি বিলাইছড়ি উপজেলাধীন বড়থলী ইউনিয়নের দুর্গম এলাকাকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শতভাগ সোলার সিস্টেম বিতরণ করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের নিকট আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
পরিচালনা বোর্ড সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আলম চৌধুরী (অতিরিক্ত সচিব), খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী, ইফতেখার আহমেদ (যুগ্মসচিব) সদস্য প্রশাসন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ^াস, রাঙামাটির পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বান্দরবান পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, বোর্ডের সদস্য বাস্তবায়ন মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ (উপসচিব), সদস্য পরিকল্পনা মো. জসীম উদ্দিন (উপসচিব), পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি জনাব মোঃ মোকলেছুর রহমান এবং বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য জনাব কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বান্দরবান পার্বত্য জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আবদুল আজিজ, মিশ্র ফল চাষ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি ইউনিট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুজিবুল আলম বোর্ডের উপপরিচালক মংছেনলাইন রাখাইন, বান্দরবান ইউনিট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা কল্যাণময় চাকমা, সিএমইউ জেনারেল ম্যানেজার পিন্টু চাকমা, রাঙামাটি নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা, গবেষণা কর্মকর্তা কাইংওয়াই ম্রো, সাগর পাল, সহকারী পরিচালক (চ:দা) সহ বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।