১৯৮৯ সালের ৪ জুন রাঙামাটি শহরের বনরূপায় নিজ পত্রিকা সাপ্তাহিক পার্বত্য বার্তা অফিসে অজ্ঞতা আততায়ীর গুলিতে নিহত হয়েছিলেন সম্পাদক আবদুর রশীদ। পাহাড়ে প্রগতিশীল রাজনীতির সম্মুখ সারির এই নেতার হত্যাকান্ডের এতো বছর পরও হয়নি বিচার। দিনটি স্মরণে প্রতিবছর তার স্মৃতির স্মারকে পুষ্পমাল্য অর্পনসহ নানা কর্মসূচী পালন করে আসছে বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন। আজ ৪ জুন দিনটি উপলক্ষ্যে শহীদ আবদুর রশীদের পুত্র মোস্তফা রশীদ রনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। স্ট্যাটাসটি আমাদের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
রাক্ষুসী ৪ঠা জুন,
আমাদের আম্মু মিসেস শামীম রশীদের ৩১টি বছরের আর্তনাদ, ঘৃণা, কষ্টের দিন। আমাদের পরিবারের শোকের মাস জুন৷ অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৯৮৯ সালের ৪ঠা জুন আমাদের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা, দৈনিক পার্বত্য বার্তার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট মেম্বার, যুব ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট,পার্বত্য শান্তি প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত কমরেড শহীদ আবদুর রশীদকে নিজ পত্রিকা অফিসে এক উপজাতিয় যুবক কতৃক গুলি করে হত্যা করা হয়।
আব্বুর হত্যাকান্ডটি ছিলো সেই সময়কার অশান্ত পার্বত্য রাজনীতি ( শান্তি চুক্তি পূর্ব) পার্বত্য চট্টগ্রাম স্থানীয় সরকার পরিষদ গঠনের আগ মূহুর্তে দেশ ব্যাপি আলোচিত পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।
৩১ টি বছর ধরে দেখেছি আমাদের আম্মু এই জুন মাস এলে প্রিয় স্বামীর হত্যার বিচারের দাবীতে কতো প্রতিবাদ,মানববন্ধন, পত্রিকায় লেখালেখি,কতো প্রচেষ্ঠা না চালিয়েছেন। কিন্তু হত্যাকান্ডের রাষ্ট্রপক্ষের করা মামলাটি যতটুকু মনে পরে দুইকি তিন ডেট চলার পর কোনো এক অদৃশ্য কারণে আলোর মুখ দেখেনি। বুঝা দরকার রশীদ হত্যাকান্ডটি কোনো সাধারণ হত্যাকান্ড নয়।
আম্মু শেষের দিকে ধারণা করেছেন, হয়তো স্বামী হত্যার বিচার হবেনা। কিন্তু হত্যার সৃকৃতি অর্থাৎ আসলে রশীদকে কারা হত্যা করেছে এটাই পরিষ্কার ভাবে জানতে চেয়েছিলেন।
অবশেষে আমাদের মা শামীম রশীদের পক্ষে তা আর জানা হলো না। ১৪ মার্চ ২০২০ তারিখ তিনিও আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন।
অনেক ছোট বেলায় বাবা কে হারিয়েছি,এখন মা-ও চলে গেলেন।
বাবার ৩১ তম মৃত্যু বার্ষিকীর এইদিনে খুব মিস করছি মা, বাবা তোমাদের।
আমরা আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই, বাবার রাজনৈতিক দল যুবইউনিয়ন পরিবার এবং সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের যারা এই দিনটিকে প্রতিটি বছর শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করেন।
সবাই আমাদের মা,বাবার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ পাক ওনাদের জন্নাতবাসী করুন