নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় বান্দরবানের লামা, আলীকদম এবং নাইক্ষ্যংছড়ি- এ তিন উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। পাশ^বর্তী চকরিয়ায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে বান্দরবানের তিনটি উপজেলার সঙ্গে সব ধরণের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
লকডাউনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান জেলা প্রশাসক মো. দাউদুল ইসলাম জানিয়েছেন, বান্দরবানের তিনটি উপজেলার পাশ^বর্তী কক্সবাজারের চকরিয়ায় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। ফলে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বান্দরবান জেলার লামা, আলীকদম এবং নাইক্ষ্যংছড়ি ৩টি উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু লামা সঙ্গে আলীকদম যোগাযোগ ব্যবস্থা সাময়িক পরিমাণে খোলা থাকবে। ইতিমধ্যে বান্দরবান জেলার সাতটি উপজেলায় সেনাবাহিনী মাঠে নেমেছে। ওষুধের দোকান, মুদি দোকান ছাড়া অন্যসব ধরণের দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে বান্দরবান জেলায় এখনো কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনে সবগুলো উপজেলায় লকডাউন করা হবে। আপাতত পরিস্থিতি অনেকটায় স্বাভাবিক রয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের লামা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাপী ছড়ানো প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মঙ্গলবার বিকেল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বান্দরবানের লামা উপজেলাকে ‘লকডাউন’ ঘোষনা করেছে প্রশাসন। লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি উপজেলাকে লকডাউনের ঘোষনা দেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে উপজেলা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির জরুরী সভার সিদ্ধান্ত ক্রমে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিষয়টি বহুল প্রচারের জন্য মাইকিংসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজ থেকেও পোষ্ট করে উপজেলা ও থানা প্রশাসন।
লামা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, সম্প্রতি ২৪জন বিদেশ ফেরত প্রবাসী দেশে ফিরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছেন। এদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেয়ো হয়েছিল। কিন্তু তারা কোয়ারেন্টিন মানছেন না। ইতিমধ্যে হোম কোয়ারেন্টিনে পৌরসভা এলাকার ছোট নুনারবিল পাড়ার মেমং মার্মা নামের এক মালয়েশিয়া ফেরত প্রবাসীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, উপজেলার সাথে সংযোগ প্রবেশ পথে কক্সবাজার জেলার রামু ও চকরিয়া উপজেলাসহ সীমান্ত বর্তী বেশ কিছু সড়কপথ অরক্ষিত রয়েছে। এ উপজেলা পার্শ্ববর্তী উপজেলার সাথে এ সকল অরক্ষিত প্রবেশ পথ লাগোয়া থাকায় জন যাতায়াত অবারিত হওয়ার কারণে করোনা ভাইরাস দ্রæত সংক্রমনের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিসমধ্যে পার্শ্ববর্তী কক্সবাজার জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজন মারাও যান।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদুল হক বলেন, এ পর্যন্ত উপজেলায় বিদেশ ফেরত ২৪ জন কোয়ারেন্টাইনে। এদেরকে সার্বক্ষনিক মনিটরিং করা হচ্ছে।
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, যেহেতু করোনা ভাইরাস সংক্রমনের সম্ভাবনা রয়েছে, সেহেতু লামা পৌরসভা, ৭টি ইউনিয়ন ও সকল ওয়ার্ড পর্যায়ের জনগনকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিজ গৃহে সার্বক্ষনিক অবস্থান করাসহ সচেতন থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।