রাঙামাটি শহর থেকে নৌরুটে রাঙামাটি থেকে বাঘাইছড়ি’র একটি নতুন লঞ্চ চালুর মতো ঠুনকো বিষয়কে কেন্দ্র করে লঞ্চ ও গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়ে টানা ছয় ঘন্টার রাঙামাটিবাসির জীবনের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছে রাঙামাটির পরিবহন মালিক শ্রমিকরা। ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে সাধারণ মানুষের। বুধকার সরকারি বন্ধের পর ঈদের ছুটির আগে বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসের সকালেই আকস্মিকই এই বিড়ম্ভবনায় হকচকিয়ে যায় শহরবাসি। কোন প্রকারপ পূর্বঘোষণা ছাড়াই সকালে বন্ধ করে দেয়া হয় রাঙামাটি শহরের রিজার্ভবাজার ও তবলছড়ি ঘাট থেকে উপজেলাগুলোর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করার জন্য প্রস্তুতি নেয়া সবগুলো যাত্রীবাহি লঞ্চ। এরপর একে বন্ধ করে দেয়া হয় সকল রুটের বাস এবং শহরের আভ্যন্তরীণ চলাচলের একমাত্র বাহন অটোরিক্সাও। ফলে সাতসকালে বিপাকে পড়েন উপজেলার উদ্দেশ্যে রওনা করতে ঘাটে আসা অসংখ্য মানুষ।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকালে ‘তানিয়া’ নামের একটি নতুন যাত্রীবাহি লঞ্চ রাঙামাটির রিজার্ভবাজার লঞ্চ ঘাটে যাত্রী উঠানোর জের ধরে সমিতিরভুক্ত লঞ্চগুলোর কর্মচারিদের সাথে বিতন্ডা ও হাতাহাতি হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষনিক বাস লঞ্চ টেক্সিসহ সব যান বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে জেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে দীর্ঘ ছয় ঘন্টা পর দুপুর একটায় আবার শুরু হয় যান চলাচল।
হঠাৎ সকল যানবাহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ছে ঈদে বাড়ি ফেরা হাজারো মানুষ। এসময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট বোটে করে সাধারণ যাত্রীরা ঘরে ফিরতে দেখা গেছে। ঈদ বাজার করতে আসা মানুষজনও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তি ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরার পথে জানান, ‘আমরা তো জানি না লঞ্চ বন্ধ। ঘাটে এসে দেখি লঞ্চ যাচ্ছে না। এখন কীভাবে বাড়ি যাব। সারা বছর অপেক্ষায় থাকি ঈদে বাড়ি যাব, সবার সাথে একসাথে ঈদে মজা করবো; কিন্তু ঘাটে এসে সেই আনন্দ অম্লান হয়ে গেছে। তাই জীবনের ঝুঁিক নিয়ে ছোট বোটে করে ঘরে ফিরতে হচ্ছে। এসব মালিক সমিতির নাটকে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের ভোগান্তি পড়তে হয়।’
শহরের বনরূপায় ঈদ বাজার করতে আসা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘ঈদের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। আজ আকাশের পরিবেশও ভালো, তাই ভাবলাম কেনাকাটা করতে যাবো। কিন্তু ঘর থেকে বের হয়ে দেখি সিএনজি চলছে না। এটা কেমন কথা লঞ্চ নিয়ে ঝামেলা; কিন্তু শহরে সিএনজিও চলবে না? ’
রাঙামাটি পৌরসভার সাবেক মেয়র সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ভূট্টো বলেছেন, এসব কাজ খুব দুঃখজনক। দাবি থাকবে,দাবি আদায়ে নানানভাবে প্রচেষ্টার পথও খোলা আছে,কিন্তু কিচ্ছু না বলে মানুষকে কষ্ট দিয়ে এটা কেমন কর্মসূচী। আমি আশা করি তাদের বোধোদয় হবে।
লঞ্চ, বাস মালিক সমিতি সভাপতি মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন, ‘হঠাৎ করে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন মৌখিকভাবে একটি লঞ্চ চলার অনুমতি দেয়। আমরা বারবার জেলা প্রশাসককে বলেছি ঈদের আগে নতুন লঞ্চ অনুমতি না দেওয়ার জন্য, কিন্তু তিনি হঠাৎ করে অনুমতি দেওয়ায় সকালে লঞ্চ ঘাটে যাত্রী তোলা নিয়ে অন্য লঞ্চের শ্রমিকের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আমাদের শ্রমিকদের মারধর করা হয়। এর প্রতিবাদে আমার ধর্মঘট করতে বাধ্য হয়েছি। ’
রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম শফি কামাল জানান, ‘আমরা লঞ্চ, বাস ও সিএনজি মালিক সমিতির নেতাদের সাথে কথা বলছি। এই বিষয়ে আমরা তাদের সতর্ক করবো, যাতে আর কোনদিন সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে সুবিধা আদায়ের চেষ্টা না করে।’
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ বলেছেন, তারা যেটা করেছে এটা দুঃখজনক। ঈদের শেষ কর্মদিবসে এভাবে সব যানবাহন বন্ধ রেখে মানুষকে কষ্ট দেয়ার মানে হয়না। আমি তাদের সাথে বসব,কথা বলব,এভাবে চলতে পারেনা। ’
3 Comments
১৯৪৭ হইতে দেশ স্বাধীন হইতে সময় লেগেছিল ১৯৭১ পর্যন্ত, এই শহরের যেমন খুশী তেমন করো, থেকে আমাদের মুক্তি পাইতে কত সাল লাগতে পারে ?
আমার ধারণা ২০২০
আপনাদের ধারনা…..
Rangamatir মানুষ সাদামাটা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করে না। তাই তাদের মাথাটা ব্যবহার করা হয় নারকেল ভাঙার জন্য।
সব ঠিক হ্যাঁয়,বাট অম্লান নয়,ম্লান হপে–