বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছে লংগদু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তাসহ ১২ জন কর্মী। ফলে সাধারণ রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন দায়িত্বরত চিকিৎসকসহ অন্যরা। এ পর্যন্ত লংগদু উপজেলায় কোভিড ১৯ এর নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২৩ জনের। এবং এদের মধ্যে ২৪ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। যার মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেরই কর্মকর্তাসহ ১২ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। এ ছাড়াও বাকি ১২ জনের মধ্যে বিজিবি জোনের একজন মেজরসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েক জন সদস্য, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সাধারণ নাগরিক রয়েছেন। তবে তাদের বেশিরভাগই সুস্থ হয়ে কাজে ফিরেছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অরবিন্দ চাকমা ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা সবাই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি পরিবারের সাথে চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। এ ছাড়াও উপসহকারী কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিধান দাশ, পরিসংখ্যানবিদ তথাগত চাকমা, ফার্মাসিস্ট জুয়েল মজুমদার, কিশোর কুমার দে, ইপিআই টেকনেশিয়ান সুমন বিকাশ চাকমা, অফিস সহকারী মো. আলী জিন্নাহ, সিনিয়র স্টাফ নার্স মাহফুজা আক্তার, স্বাস্থ্য সহকারী তোফায়েল আহাম্মেদ, বিনয় চাকমা, অ্যাম্বুলেন্স চালক রতœ বিকাশ চাকমা ও সোহেল চাকমা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে এ ১২ জনের ৭ জন করোনাকে জয় করে কাজে ফিরেছেন। বাকি পাঁচ জন হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন আছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্যাথলজিস্ট আবুল হোসেন লিটন জানান, আমরা যারা করোনার নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষাগারে পাঠানোর সাথে জড়িত ছিলাম তাদের মধ্যে ২ জন ছাড়া বাকি সবাই করেনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এখন নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব কিন্তু পরীক্ষাগারে পাঠানোর মতো লোকবল নাই। লোকবল সংকটের কারণে আমাদের কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে। গত ৪ দিনে আর কোনো নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো সম্ভব হয়নি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. ফকরুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের কর্মকর্তসহ বেশ কয়েকজন কর্মীর করোনা পজিটিভ হওয়ায় নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানোর ক্ষেত্রে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি লঞ্চযোগে রাঙামাটি ল্যাবে নমুনা পাঠাতে। সেটা যদি সম্ভব না হয় তবে বিকল্প হিসেবে ভাড়ায় চালিত মটরসাইকেলে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত পাঠানোর চিন্তা করেছি। যেহেতু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত তাই এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একটু সময় লাগছে। তবে আমরা সবাই মিলে সাধারণ চিকিৎসা কার্যক্রম সচল রেখেছি। আশা করছি সবাই দ্রæত করোনামুক্ত হয়ে কাজে ফিরবেন।