রাঙামাটি

লংগদুতে সাত ইউপির পাঁচটিতেই আ.লীগের বিদ্রোহী

আরমান খান, লংগদু ॥
রাঙামাটির লংগদুতে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি। এরই মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। তবে এই উপজেলার সাত ইউনিয়নের পাঁচটিতেই আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থীর বাইরেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতা। দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় তারা হয়েছেন বিদ্রোহী। বিদ্রোহী এই নেতাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সহসভাপতি পদে থাকা দুই সিনিয়র নেতা। ফলে নির্বাচনে জেতা এবং দলীয় শৃঙ্খলা ফেরাতে হিমশিম খাচ্ছে উপজেলা আওয়ামীলীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলো।

উপজেলার মোট সাত ইউপির মধ্যে আটারকছড়া ইউনিয়নে আ.লীগের একক প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অজয় চাকমা (মিত্র)। এবং কালাপাকুজ্যায় আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী উপজেলা কৃষক লীগের আহবায়ক ও বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তফা মিয়া। এ দুই ইউনিয়ন ছাড়া বাকি পাঁচটিতেই আওয়ামীলীগের বিদ্রোহীরা দলের মনোনীত প্রার্থীর পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছে ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম, এখানে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন স্কুল শিক্ষক ও ইউনিয়ন আ.লীগের নেতা রকিব হোসেন। ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী তরুন এই বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আ.লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুর রহিমের ভাতিজা। চাচা’র আশীর্বাদে গত উপজেলা নির্বাচনেও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দি¦তা করেন তিনি। সেই নির্বাচনে জিততে না পারলেও দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন রকিব হোসেন।

বগাচত্বর ইউনিয়নে আ.লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহসভাপতি আবুল বশর। এখানে বিদ্রোহী হয়েছেন সম্প্রতি আ.লীগে যোগদান করা ইউনিয়ন আ.লীগের সদস্য ও সাবেক ইউপি সদস্য বোরহান উদ্দিন। তিনি ঘোড়া প্রতীকে প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন।

ভাসান্যাদম ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে হেরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান হযরত আলী। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নির্বাচিত সভাপতি। এখানে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন। নির্বাচনের মাঠে নতুন মুখ ইসমাইল হোসেনের ভোটের লড়াইয়ে প্রধান বাধা বিদ্রোহী প্রার্থী হযরত আলী।

উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ মাইনীমূখ ইউনিয়নে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আ.লীগের সহসভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল আলী। মনোনয়ন দৌড়ে হেরে এই ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন মোহাম্মদ এরশাদ। বয়সে তরুন এই বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক সরকারের পুত্র। গত নির্বাচনেও সভাপতি বারেক সরকারের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ সেলিম দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিলেন।

উপজেলা সদর ইউনিয়নে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য রতন কুমার চাকমা। মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থেকেও শেষ বেলায় বঞ্চিত হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সহসভাপতি কুলিন মিত্র চাকমা আদু। ব্যাপক জনপ্রিয় এই আওয়ামীলীগ নেতাও লড়ছেন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে।

উপজেলার সাত ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে গণসংযোগ ও পথসভা করছেন জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এই নির্বাচন কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল দাশ বাবু।

তিনি বলেন, লংগদু উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন, তারা প্রত্যেকেই দলের জন্য নিবেদিত ও ত্যাগী। দলের মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করতে আওয়ামীলীগ পরিবারের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন এবং বিদ্রোহীদের পক্ষে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাজ করছেন তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one + 3 =

Back to top button