ওমর ফারুক মুছা, লংগদু
মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর উদ্যোগে সড়কের পার্শ্বে পরীক্ষণমূলক বিদেশী ‘ইকো ট্রি’ নামে গাছের চারা রোপন করা হয়েছে।
রবিবার (২৫জুলাই) লংগদু উপজেলার কালাপাকুইজ্যা ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে লংগদু এলজিইডি বিভাগের প্রকৌশলী ড. জিয়াউল ইসলাম মজুমদার আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ইকো ট্রি’ নামে গাছের চারা রোপন করে কর্মসূচী উদ্বোধন করেন।
এসময় লংগদু আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক বাবুল দাশ বাবু, লংগদু উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ঝান্টু, কালাপাকুজ্জা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা মিয়া, লংগদু এলজিইডি উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ সাইফুল ইসলাম নাদিম, ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তি উপস্থিত ছিলেন।
‘ইকো ট্রি’ নামে বিদেশী গাছের চারা রোপন করার ব্যাপারে প্রকৌশলী ড. জিয়াউল ইসলাম মজুমদার জানান ‘আমি বরাবরই নতুন ভালো কিছু পেলে তা সবাইকে অবগত ও সেটা বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহন করি’। কিছুদিন পূর্বে ফেস বুকের কল্যাণে ‘ইকো ট্রি’ নামে একটি বিপুল বানিজ্যিক ও পরিবেশ বান্ধব সম্ভাবনাময় গাছের সন্ধান পাই। বিভিন্ন সাইট ঘুরে এ গাছের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে মনে হলো আমাদের দেশে এটা পরিবেশ রক্ষা, রাস্তা ও উচূ বাঁধের ক্ষয়রোধ সহ বানিজ্যিক ভাবেও বিপুল সম্ভাবনাময়।
এর বৈজ্ঞানিক নাম Paulownia Elongata. Paulownia গোত্রের অনেকগুলো ভ্যারাইটির মধ্যে এটা একটি। এর কাঠ যেমন বিশ্বমানের, এর ফুল থেকে সংগৃহীত মধুও বিশ্বমানের। তাছাড়া, সৌন্দর্য বর্ধন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এর কার্যকারিতা অনেক বেশী। তিনি জানান জাপান, চীন, ভিয়েতনাম, হল্যান্ড, উত্তর আমেরিকা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশে সৌন্দর্য বর্ধন ও বানিজ্যিকভাবে এগাছের চাষ হয়ে থাকে। এসংক্রান্ত তথ্য ইন্টারনেট থেকে চাইলেই সংগ্রহ করা যাবে। আমাদের দেশে এলজিইজি, সওজ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ধার সহ ভূমির যেখানে পানি উঠে না বা জমে থাকেনা- সেখানে এগাছ রোপন করা যায়। পাহাড়ের ঢালে এটা সহজেই চাষ করা যায়। খেয়াল করে একটু পরিচর্যা করতে হবে। প্রকৌশলী জানান, ঈদের বন্ধে ঢাকা থেকে কিছু চারা সংগ্রহ করে পরীক্ষণমূলক ভাবে রোপন করলাম। পরিচর্যা করে যদি গাছ বড় হয় আরও বিস্তৃতভাবে লাগানো হবে।
এ গাছের গুরুত্ব সম্পর্কে যা বলা হচ্ছে
আমাদের দেশের সেগুন থেকেও উন্নত মানের কাঠ। ওজনে অনেক হালকা, ৮ কেজি প্রতি ঘণফুট। বিমান, সার্ফিং বোট, নৌকা, হালকা কাঠের বাড়ী নির্মান, গীটার বোর্ডে এবং সুন্দর ফার্নিচার তৈরীতে একাঠ ব্যবহৃত হয়। প্রতি ৮ বছরে গাছ বিক্রি করা যায় এবং একবার লাগালে কর্তনকৃত গোড়া থেকে পর্যায়ক্রমে ৮ বার নতুন গাছ জন্মায়। এগাছের পাতা এক মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। ফলে প্রতি গাছ ১০ গুন কার্বণ ডাই অক্সাইড শোষন করে এবং কয়েকগুন বেশী অক্সিজেন পরিবেশে যুক্ত করে। এতে পরিবেশ রক্ষা হয়। এগাছ ৪০-৫০ফুট লম্বা হয়, এতে কাঠ বেশী পরিমানে পাওয়া যায়। এর পাতা মাটি উর্বর করে এবং গো খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর রঙিন ফুল থেকে বিশ্বমানের মধু সংগ্রহ করা যায়।
অফিস, আঙ্গিনার সৌন্দর্য বর্ধনে এগাছ অনেক জনপ্রিয়। ‘ইকো ট্রি’ কাঠে বিশেষ রাসায়নিক যৌগ থাকায় ঘুনে ধরে না কিংবা পানিতেও পচে না।
এর শিঁকড় ঘন ভাবে ৩০ ফুট গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে। এতে প্রাকৃতিক পাইলিং এর মাধ্যমে মাটির ক্ষয়রোধ করে।