‘স্বাস্থ্য পুষ্টি অর্থ চাই,দেশী ফলের গাছ লাগাই’- প্রতিপাদ্য বিষয়ের আলোকে রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় তিন দিন ব্যাপি ফলদ বৃক্ষরোপণ মেলা শুরু হয়েছে । শনিবার সকালে মেলা উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা উপজেলার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে মেলা প্রঙ্গন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে গিয়ে মিলিত হয় ।
শোভাযাত্রা শেষে সকাল ১১টায় মেলার শুভ উদ্বোধন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন। উদ্বোধন শেষে মেলা প্রাঙ্গনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাদ্দেক মেহ্দী ইমাম এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন ।বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কিশোর কুমার মজুমদার, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা মো.মহিউদ্দীন,সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নিজাম উদ্দীন ভূঁইয়া প্রমূখ ।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, পাহাড়ী এলাকায় ফলদ বৃক্ষরোপনের বিস্তার দিনে দিনে বেড়ে চলেছে । লাভজনক হওয়ায় এলাকার পাহাড়ী বাঙ্গালী কৃষকেরা সকলেই এখন ফলদ বৃক্ষ রোপণে এগিয়ে আসছেন। জাতীয় ও আর্ন্তজাতিকভাবে কৃষি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে । দেশের চাহিদা পূরণ করে বর্তমানে আমাদের দেশের আম,কাঠাল ,লিচু,পেয়ারা বিদেশে রপ্তানী হচ্ছে ।দেশের বাজারেও এসব দেশী ফলের ভালো মূল্য পাচ্ছেন চাষীরা । পাহাড়ের পতিত জমিতে আরো বেশি চাষাবাদের ব্যবস্থা করা হলে এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি বেগবান হবে ।
সভায় সকল উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা,স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ,সাংবাদিক ও শতাধিক কৃষক উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে রাজস্ব ক্ষাতে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে স্থাপিত আঁউশ ধান ও তিল’র বীজ উৎপাদন প্রদর্শনী থেকে বীজ সংগ্রহের জন্য ৫৮ জন কৃষকের মাঝে প্লাস্টিকের বিশেষ ড্রাম বিতরণ করা হয় ।সবশেষে অতিথিবৃন্দ মেলায় অংশ গ্রহণকারী বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন ।মেলার স্টল সমূহের মধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বেশ কয়েকটি প্রকল্প অতিথিদের দৃষ্টি আকর্ষন করে ।যার মধ্যে আছে ,বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন,ট্রি পেপে চাষের উপকারিতা ,বাড়ী বাড়ী স্বজনে চাষ,গোবর সংরক্ষনের আধুনিক পদ্ধতি ইত্যাদি।
এছাড়াও মেলায় প্রদর্শিত স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত মাদ্রাজী বেল,সবরী কলার কাদি,বাতাবি লেবু,সাতকড়া,ও আমড়াসহ গাছ দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষন করে ।মেলায় বৃটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোর নিজস্ব নার্সরীতে উৎপাদিত ফলদ ও ঔষধি গাছের চারাসহ একটি স্টল অংশ নিয়েছে । এসব চারা মেলা শেষে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে ।
১৫ থেকে ১৭ জুলাই দর্শনার্থীদের জন্য সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা উন্মুক্ত থাকবে । এছাড়াও প্রতিদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় শিল্পিদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ।