লংগদু প্রতিনিধি ॥
মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষার্থে উপজেলা পরিষদের প্রধান সড়ক ও লংগদু বাজারে পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নামেন ওসি আরিফুল আমিন। মঙ্গলবার বিকালে অভিযান চলাকালে বাজারের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে ব্যবসায়ীদের ডাস্টবিন ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এ সময় বেশ কিছু দোকানের সামনে রাখা আবর্জনা তাৎক্ষণিক পরিষ্কার করানো হয়। এছাড়াও ফুটপাত দখল করে রাখা দোকানের মালামাল এবং অস্থায়ী ছাউনি উচ্ছেদ করা হয়। এবং বাজারের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা জোরদার করতে পরামর্শ দেয়া হয়।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বিশাল কাপ্তাই হ্রদের বুক চিরে লংগদু উপজেলার অবস্থান। কাপ্তাই হ্রদের বিশলতার মুগ্ধতা উপভোগ করতে সারা বছরই পর্যটকরা এ পথে যাতায়াত করে। পাশাপাশি পাহাড়ি এই উপজেলা হয়ে বাংলার দার্জিলিং খ্যাত সাজেক ভ্রমণে আসেন অসংখ্য পর্যটক। পর্যটকদের জন্য এই উপজেলাকে আকর্ষণীয় করতে নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখা একান্ত প্রয়োজন। ইতোমধ্যে এই উপজেলার পর্যটন সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিতে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কাট্টলী বিলের মাঝে ওয়াচ টাওয়ারসহ পিকনিক স্পট, বৈচিত্র বিলাস শিশু পার্ক, ‘আই লাভ লংগদু’ লেখা লাভ পয়েন্ট, কালাপাকুজ্যা ইউনিয়নে অরণ্য বিথীকা ইকো কটেজ। এই সব প্রকল্পের বেশির ভাগই এখন প্রতিষ্ঠিত।
লংগদু থানায় দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই নানা সামাজিক ও সচেতনতামূলক কর্মসূচির বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন ওসি আরিফুল আমিন। উপজেলার বিভিন্ন স্কুল কলেজে শিক্ষার্থীদের আইনি ও সামাজিক শৃঙ্খলার নানা বিষয়ে নিয়মিত ক্লাস নেন তিনি। পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজেও নিয়মিত মাঠে থাকছেন চৌকস এই পুলিশ কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার বিকালে পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ওসি আরিফের সাথে আরো ছিলেন লংগদু বাজার কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ, পরিবেশকর্মী আরমান খান।
এ বিষয়ে বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহামেদ বলেন, ওসি সাহেবের এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। বাজারে ব্যবসায়ীদের কল্যাণের জন্যই নিয়মিত তার প্রতিষ্ঠানের চারপাশ পরিষ্কার রাখা দরকার। বাজার কমিটি থেকেও বিভিন্ন সময় বাজার পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা করেন না। খুব শীঘ্রই সভা ডেকে বাজার ও উপজেলার প্রধান সড়কটি নিয়মিত পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয় সাংবাদিক ও পরিবেশকর্মী আরমান খান বলেন, পাহাড়ি উপজেলার মধ্যে লংগদু উপজেলার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। এখানকার বেশিরভাগ এলাকা কাপ্তাই হ্রদের তীরে গড়ে উঠেছে। পর্যটকদের কাছে এই এলাকা দিন দিন আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। এলাকার সৌন্দর্যবর্ধনে এবং আকর্ষণীয় করতে এলাকবাসীকেই উদ্যোগী হতে হবে। তবে সবার আগে প্রয়োজন আমাদের চারপাশটা পরিস্কার রাখা। ওসি সাহেব নিজ উদ্যোগে যে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেছেন এটা প্রসংশনীয় কর্মসূচি। প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে সবাই মিলে কাজ করলে শীঘ্রই লংগদুর দৃশ্যপট বদলে যাবে।
ওসি আরিফুল আমিন বলেন, লংগদু উপজেলা সদর এলাকাটি খুবই ছোট। এখানে নৌপথে ও সড়ক পথে শত শত মানুষ যাতায়াত করেন। তাদের একটি বড় অংশই পর্যটক। এলাকাটি পরিচ্ছন্ন রাখা এবং পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করা আমাদের সবার দায়িত্ব। আমি আমার জায়গা থেকে উদ্যোগ নিয়েছি। এখন সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সবাই মিলে চেষ্টা করলে পরিচ্ছন্ন উপজেলা হিসেবে পরিচিতি পেতে সময় লাগবে না।