
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি রাঙামাটি জেলা ইউনিটের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে ‘অনিয়ম, দলীয়করণ, ভোট জালিয়াতি’র অভিযোগ তুলে ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম মুন্না। একই সঙ্গে তিনি রেড ক্রিসেন্টকে ‘দলীয় প্রভাবমুক্ত’ ও ‘পুনর্বাসন কেন্দ্রে’ পরিণত না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জাহাঙ্গীর আলম মুন্না বলেছেন, ‘মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার ব্রত নিয়ে পরিবর্তনের লক্ষে রেড ক্রিসেন্ট রাঙামাটি জেলা ইউনিটের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে আমি সেক্রেটারি পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করি। ভোটের দিন শুক্রবার সকাল থেকে জেলা শহরের শহীদ আব্দুল আলী একাডেমি বিদ্যালয়ে নির্বাচন শুরু হবার পর থেকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা কেন্দ্র দখল করে ব্যাপক অনিয়ম, দলীয় প্রভাব ও জাল ভোটের মাধ্যমে নিজেদের দলীয় মনোনীত প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নির্বাচনকেও বিতর্কিত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘রেড ক্রিসেন্ট সর্ম্পকে নূন্যতম কোন জ্ঞান নেই; এমন দলীয় অনুগতদের বার্ষিক ভোটারের পাশাপাশি একটি নির্দলীয় প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করতে প্যানেল বানিয়ে সংঘবদ্ধ ভোট প্রদান করা হয়। নির্লজ্জভাবে ভোটারদের মাঝে বিতরণ করা হয় নিজস্ব প্রার্থী তালিকা। ন্যাক্কারজনকভাবে দলীয় প্রভাব ও জাল ভোট প্রদান করে এমন একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সুনাম নষ্ট করেছে। ভোট শুরুর হওয়ার পর থেকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, রেড ক্রিসেন্ট রাঙামাটি জেলা ইউনিটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুবায়েত আক্তারসহ (ভোটার নং-১৭), নুরুল আমিন (ভোটার নং-৭২), বাবুল কান্তি দে (ভোটার নং-১১৮), মো. আব্দুল মালেক (ভোটার নং-১৩৮), মো. আব্দুল মতিন (ভোটার নং-১৩৯), নিভানন চাকমা (ভোটার নং-১৪০), মো. আতাউর রহমান (ভোটার নং-১৯৪), নন্দন কানন মুৎসুদ্দী (ভোটার নং-২০৫), এসএম তারিকুজ্জামান (ভোটার নং-২১১), সুবর্ণ চাকমা (ভোটার নং-৯০), আবুল কামাল আজাদ (ভোটার নং-২৬৬), নয়ন দাশ (ভোটার নং-৪৭৭), সুজন কুমার মহাজন (ভোটার নং-৪৯৪), তরুন মনি চাকমা (ভোটার নং-৫২৯), মো. শাহজাহান (ভোটার নং-২৬৭) সহ এমন আরও অসংখ্য আজীবন সদস্য যারা নানা কারণে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত না হলেও তাদের নামে জাল ভোট প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি গত বারের (২০১৮) বিতর্কিত নির্বাচনের মতো করে এই নির্বাচনেও বিভিন্ন উপজেলা থেকে বার্ষিক সদস্যের নাম করে নামে-বেনামে জাল ভোট দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র নির্বাচনে নিজেদের জয় নিশ্চিত করার জন্য বার্ষিক সদস্য করা হয়। যা রেড ক্রিসেন্ট এর মূল লক্ষ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এমন ব্যাপক অনিয়ম, নির্লজ্জ, দলীয়করণ ও জাল ভোট প্রদানের নির্বাচনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
বিবৃতিতে মুন্না আরও বলেন, ‘রেড ক্রিসেন্টকে দলীয় প্রভাবমুক্ত ও নির্দলীয় মানব সেবায় নিয়োজিত রাখার জন্য এমন বিতর্কিত নির্বাচনের ফলাফল ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি এবং সেই সাথে অনুরোধ করছি, ভবিষ্যতের নির্বাচনগুলোতে যেনো আজীবন সদস্যদের নিয়েই এই ভোট পরিচালিত হয়, নতুবা এবারের মতো ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী এই প্রতিষ্ঠানটি দলীয় পুনর্বাসন কেন্দ্রে পরিণত হবে, যা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক।’ (বিজ্ঞপ্তি)