নিজস্ব প্রতিবেদক,বান্দরবান
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে এক সেনা সদস্যসহ চারজন নিহত হয়েছেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে।
বুধবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে রুমা উপজেলার বথিপাড়া এলাকায় সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য জনসংহতি সমিতির সদস্যদের সঙ্গে বান্দরবানের রুমা জোনের একটি টহল সেনাদলের গোলাগুলি হয় ।
নিহত সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান ছিলেন ওই টহল দলের কমান্ডার।
এছাড়া ফিরোজ নামে একজন সৈনিক পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ অভিযানে একটি এসএমজি, ২৭৫ রাউন্ড গুলি, তিনটি ম্যাগাজিন, তিনটি গাদা বন্দুক, গাদা বন্দুকের ৫ রাউন্ড গুলি, চার জোড়া ইউনিফর্ম এবং ‘চাঁদাবাজির’ ৫২ হাজার ৯০০ টাকা উদ্ধার করার কথাও জানানো হয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে।
বান্দরবান সেনা রিজিওনের মেজর এরশাদ উল্লা বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের একটি দল’ রুমা উপজেলার বথিপাড়া এলাকায় চাঁদাবাজি জন্য জড়ো হচ্ছে খবর পেয়ে রাইং খিয়াং লেক আর্মি ক্যাম্প থেকে সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবের নেতৃত্বে একটি টহল দল সেখানে যায়।
“রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলের একটি জুম ঘর থেকে সন্ত্রাসীরা সেনা সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালালে সেনা সদস্যরাও পাল্টা গুলি করে। গোলাগুলির এক পর্যায়ে জেএসএসের (পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি-সন্তু লারমা) তিন সন্ত্রাসী এবং সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলে মারা যান।”
১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি সাক্ষরের পরও প্রায় দুই হাজার শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র অস্ত্র সমর্পন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসলেও পাহাড়ে অন্তত চারটি সশস্ত্র সংগঠন ভিন্ন ভিন্ন দাবিতে তৎপরতা চালিয়ে আসছে গত দুই যুগ ধরে। এসব সংগঠন মূলত: এলাকার আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রন নিয়ে নিজেদের মধ্যে সশস্ত্র তৎপরতায় লিপ্ত থাকলেও সাম্প্রতিক একাধিক ঘটনায় আইনশৃংখলাবাহিনীর উপর হামলার মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছে। এনিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে পাহাড়ে। সম্প্রতি ঢাকায় এক আলোচনা সভায় পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুরের আঞ্চলিক দলগুলোর এইসব অস্ত্রশস্ত্র ও সশস্ত্র তৎপরতাকে ‘পার্বত্য চুক্তির স্পষ্ট বরখেলাপ’ বলে মন্তব্যও করেছেন। তবে আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে সন্তু লারমার জনসংহতি সমিতি এবং জনসংহতি সমিতি (এমএনলারমা) চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবি জানালেও প্রসীত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ এর প্রধান দাবি ‘পাহাড়ে পূর্ণ স্বায়ত্ত্বশাসন’। আঞ্চলিক দলগুলোর পরস্পরবিরোধী সশস্ত্র পাল্টাপাল্টি হামলায় চুক্তির পর গত ২৪ বছরে অন্তত এক হাজার নেতাকর্মী নিহত হয়েছে সবপক্ষের।