সুহৃদ সুপান্থ
‘শান্তিচুক্তি করলেন,আপনি অস্ত্র পকেটে রেখে দিলেন,এটা কেমন কথা হলো ? আপনার উদ্দেশ্য কি ছিলো ? এটা তো সরকারের সঙ্গে ধোঁকাবাজি হয়ে গেলো। আমি অনুরোধ করব,সন্ত্রাস এবং শান্তি একসঙ্গে চলতে পারেনা। যারা এখনো অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে মানুষকে জিম্মি করে এই এলাকার মানুষের ঘুম হারাম করতে চাচ্ছেন,তাদেরকে অনুরোধ করব, আপনারা অস্ত্র পরিহার করুন। রাষ্ট্রের সাথে সংঘাতে জড়ানোর চেষ্টা করবেন না। রাষ্ট্রের শক্তি অনেক বড় শক্তি। সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বারবার অনুরোধ করা হয়েছে আপনারা অস্ত্র পরিহার করুন। আর না হলে অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলবে। সেই অভিযানে আপনারা টিকতে পারবেন না। আর এইসব কর্মকান্ড করে কার লাভ হচ্ছে,যার অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাস করছে,মানুষ খুন করে চাঁদাবাজি করে আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করছে,তাদের জীবন কি এটা কোন জীবন ? তাদেরও পরিবার ছেড়ে পালিয়ে থাকতে হয়,তাদের পরিবার পরিজনও নিরাপত্তাহীনতায় থাকেন। এটা কোন স্বাভাবিক জীবন হতে পারেনা। আমি আবারও আজকের এই সভা থেকে অনুরোধ করব,যারা একনো অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের নামে মানুষকে জিম্মি কওে অর্থ আদায় করছেন,হুমকি দিচ্ছেনতাদওে প্রতি আমার অনুরোধ,আপনারা দ্রুত অস্ত্র পরিহার করুন,স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন। সরকার থেকে সুযোগ নিয়েছিলেন,সেই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড কওে কেউ কোনদিন বেশিদিন টিকে থাকতে পারে নাই।’
সোমবার রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত তৃনমূল প্রতিনিধি সভায় পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুব উল হানিফ।
সোমবার সকালে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপির সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বরের সঞ্চালনায় তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি। প্রতিনিধি সভায় আওয়ামীলীগের ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা বক্তব্য রাখেন।
কুষ্টিয়া অঞ্চলে সর্বহারা রাজনীতির নামে সন্ত্রাস ও তার দমের উদাহরণ দিয়ে মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন-সরকারের সাথে ধোঁকাবাজি করে টিকে থাকা যায়না। সাময়িকভাবে প্রভাব বিস্তার করে হয়ত ফায়দা লুটতে পারবেন কিন্তু দীর্ঘদিন টিকে থাকতে পারবেন না।
মাহবুব উল আলম হানিফ জেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের আশ্বস্ব করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে পাহাড়ের চলমান বিষয়টা আমরা জানাব এবং এই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে যেনো সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেয়া হয় সেটাও নেত্রীকে বলব। এই এলাকার মানুষকে জিম্মি করে,এই সন্ত্রাসীরা এই এলাকার মানুষের জীবনকে হারাম করে দিবে এটাকে বরদাশত করা যাবেনা। যারা ইতোমধ্যে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে। যার অপরাধ করেছে তাদের প্রত্যেককে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। এই বাংলাদেশে বাস করে এই ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে টিকে থাকার কোন সুযোগ নেই।’
মাহবুব উল হানিফ বলেন-‘দেশের রির্জাভ বেড়েছে, মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, পারমানবিক বিদুৎ কেন্দ্র স্থাপনকারি বিশ্বের দশম দেশ বাংলাদেশ। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল, মেট্রোরেল এর মতো উন্নয়ন কাজ চলছে। তবুও বিএনপি নেতারা, চোখে উন্নয়ন দেখে না, তারা প্রতিনিয়ন উন্নয়ন নিয়ে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।’
এই প্রতিনিধি সভায় রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের অধস্তন বিভিন্ন ইউনিট,সহযোগি সংগঠন,নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিসহ বারো শত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অনেকেই,যার মধ্যে ছিলেন চিংকিউ রোয়াজা,ফিরোজা বেগম,পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হাজী মনসুর আলীসহ সকল উপজেলার সভাপতি বা সম্পাদকরা। তারা সবাই একযোগে,পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলোর অবৈধ অস্ত্রের দাপটের কাছে নিজেদের অসহায়ত্ব তুলে ধরে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জোর দাবি এবং নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ করেন।