রামগড় প্রতিনিধি ॥
খাগড়াছড়ির রামগড়ে পঞ্চম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছিলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. বেলায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগকে মিথ্যা এবং সাজানো দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষকের পরিবার। তাঁরা দাবি করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবী এবং তার সহযোগী রূপম ত্রিপুরা ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনা সাজিয়েছেন।
রবিবার রামগড় স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন অভিযুক্ত শিক্ষকের স্ত্রী আয়েশা বেগম ও পিতা নুরুল হুদা।
সংবাদ সম্মেলনে আয়েশা বেগম জানান, থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবীর সাথে তার স্বামীর ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব রয়েছে। কয়েক বছর আগে ইন্দ্রানী দেবী ভৃগুরাম কার্বারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকাকালীন বেলায়েত হোসেনের ভাগিনা তারেক হোসেন কে বেদম প্রহার করে। তখন বেলায়েত হোসেন বিভিন্ন পর্যায়ে এ নির্যাতনের প্রতিবাদ জানালে ইন্দ্রানী দেবীকে শাস্তিমুলক অন্যত্র বদলি করা হয়। এ ঘটনায় ইন্দ্রানী দেবী সবসময় বেলায়েত হোসেনকে দায়ী করে আসেন।
পরে ইন্দ্রানী দেবী বদলি হয়ে বেলায়েত হোসেনের বর্তমান কর্মস্থল থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসেন। বিদ্যালয়ের কাজকর্মে উদাসীনতা এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে প্রায় সময় তার স্বামী এবং প্রধান শিক্ষকের মাঝে বাকবিতন্ডা হয়। বিষয়গুলো তার স্বামী রামগড় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়েও অভিহিত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরোও জানান, রূপম ত্রিপুরা নামের স্থানীয় এক বখাটে প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবীর প্রভাব খাঁটিয়ে সব সময় বিনা অনুমতিতে ১০-১২জন নিয়ে শ্রেণীকক্ষে প্রবেশ করতো এবং তাদের মোবাইল ফোন চার্জ দিতো। কিছুদিন আগে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে বেলায়েত হোসেন ও রূপম ত্রিপুরার মাঝে তুমুল বাকবিতন্ডা হয়। রূপম ত্রিপুরা তখন বেলায়েত হোসেনকে দেখে নিবেন বলে হুমকি দেন। তার কিছুদিন পর রূপম ত্রিপুরাকে বিদ্যালয়ে দপ্তরি পদে নিয়োগ দিতে চাইলে বেলায়েত হোসেন এর প্রতিবাদ জানায়। এতে রূপম ত্রিপুরা তার ওপর আরোও ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন।
সংবাদ সম্মেলনে বেলায়েত হোসেনের পিতা নুরুল হুদা দাবি করেন, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে নিরীহ এক মেয়েকে দিয়ে তার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। এর জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবী এবং রূপম ত্রিপুরাকে দায়ী করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় উপস্থিত ছিলেন বেলায়েত হোসেনের পিতা নুরুল হুদা, স্ত্রী আয়েশা বেগম, ভাই মামুন হোসাইন ও তার দুই কন্যা।
থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি নুরুল আমীনেরর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জানান, বিষয়টি তিনি জানতেন না। শিক্ষার্থীর পরিবার এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি তাকে জানাননি।
উল্লেখ্য, ১২ মে থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বেলায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে রামগড় থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে মামলা করেন পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর মা।