রাঙামাটির বিভিন্ন বাজারসমূহে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদারকরণসহ বাজারের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং বাজারে সনাতনী বাটখারার ব্যবহার বন্ধসহ ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। রাঙামাটি জেলা প্রশাসনরে এই উদ্যোগে সহায়তা করবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং ক্যাব। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বাজার কমিটিগুলোর এ ব্যাপারে প্রশাসনকে সহযোগিতা করবেন। ১৫ মার্চ রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বিশ^ ভোক্তা অধিকার দিবসের আলোচনা সভায় এই সব সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
বিশ^ ভোক্তা অধিকার দিবসের এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম শফি কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: নজরুল ইসলাম, রাঙামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমনী আক্তার, ক্যাব, রাঙামাটির সভাপতি ও প্রাক্তন পৌর চেয়ারম্যান কাজী নজরুল ইসলাম এবং প্রাক্তন পৌর চেয়ারম্যান ডা. এ কে দেওয়ান বিশেষ অতিথি ছিলেন।
ক্যাব, রাঙামাটির সম্পাদক মো: মোস্তফা কামাল, বনরূপা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো: আবু সৈয়দ, রিজার্ভ বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন, তবলছড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নাজিম উদ্দিন এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন।
ক্যাব, রাঙামাটির নেতৃবৃন্দ আলোচনা সভায় বলেন, রাঙামাটির বিভিন্ন বাজারগুলোতে পরিচ্ছন্ন পরিবেশের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে বাজার পণ্য ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। পাশাপাশি যত্রতত্র বাজার গড়ে উঠায় সাধারণ জনগণের চলাফেরায় ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবশে বাজারে পণ্য দ্রব্যের বেচা কেনার এই প্রবণতা বন্ধের ওপর জোর দেন বক্তারা। পাশাপাশি বাজারের বিভিন্ন দোকানসমূহে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসমূহের মূল্য তালিকা টাঙানো বাধ্যতামূলক হলেও অনেক দোকানে এটি এখন কার্যকর করা হচ্ছে না। এতে ক্রেতা সাধারণকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এসব বিষয়ে বাজার কর্মকর্তার নজরদারীর কমতি রয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়। এছাড়া বাজারে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে এখনো অনেক ক্ষেত্রে সনাতনী বাটখারার প্রয়োগ থাকাসহ বেকারি পণ্য সামগ্রীর মেয়াদ বিষয়ে সঠিক তথ্য দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়।
আলোচনা সভায় রাঙামাটিতে পণ্য পরিবহন এবং পাশের্^ল আদান প্রদানে রাঙামাটি এসএ পরিবহন কর্র্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়। বলা হয় এই প্রতিষ্ঠান পণ্য প্রেরণে ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করছেন। এ ব্যাপারে ইতিপূর্বেও সাধারণ জনগণের অভিযোগ রয়েছে।
ভোক্তা অধিকার দিবসের আলোচনা সভায় রাঙামাটির নবাগত জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ রাঙামাটির বাজারসমূহসহ রাঙামাটির সার্বিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে বলেন, রাঙামাটিকে একটি পরিচ্ছন্ন শহর হিসাবে গড়ে তোলার জন্য আগামী এপ্রিল মাস হতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন দপ্তর এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে। তিনি বাজারসমূহে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকল্পে বাজার ব্যবসায়ী সমিতিকে উদ্যোগী হওয়ার আহবান জানান।
রাঙামাটির বাজারসমূহে ভোক্তাদের অধিকার যাতে নিশ্চিত হয় সেদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ববস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন বাজারে পণ্যমূল্য তালিকা প্রদর্শনসহ বাজার ব্যবস্থার মনিটরিং নিশ্চিত করা হবে। মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য তিনি রাঙামাটি পৌর কর্তৃপক্ষের সহায়তা কামনা করেন এবং ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য উদ্যোগী ভূমিকা পালনের জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আহবান জানান। প্রয়োজনে তিনি ক্যাবের সহায়তা গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে বলেন, বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন হলে যে কোন সময় জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। তিনি বাজারে পণ্য দ্রব্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কেউ যাতে অধিক মুনাফা অর্জন করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দকে আহবান জানান।
1 Comment
শুধু রাঙ্গামাটি শহরে নয়, সমগ্র জেলায় যেন এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।