সাইফুল হাসান ॥
রাঙামাটিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ইনচার্জ ও এএসআইয়ের বিরুদ্ধে টাকা না দেয়ায় আসামি করার অভিযোগ করেছেন এক দম্পতি। সোমবার সকালে শহরের কলেজগেইট এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তুলেন রুবি বেগম ও তাঁর স্বামী মাহবুব আলম। সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন রুবি বেগমের মা নাজমা খাতুন, পিতা চুন্নু মিয়া, স্থানীয় ছাত্রনেতা পারভেজ খাঁনসহ স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ।
লিখিত বক্তব্যে রুবি বেগম বলেন, আমার প্রথম সংসারের ছেলে ইনিছুল হক শামীমকে গত ১৪ মে শনিবার ইয়াবাসহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আটক করে। পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের ইনচার্জ শিবনাথ কুমার সাহা ও এসআই লিটন নন্দী আমার থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমার স্বামী মাহবুবকে দুই নাম্বার আসামি করার হুমকি দেয়। টাকা না দেয়ায় পরবর্তীতে আমার স্বামীকে দুই নাম্বার আসামি হিসেবে মামলায় অন্তর্ভূক্ত করে। তিনি অভিযোগ করেন, শুধুমাত্র টাকার জন্য আমার স্বামীকে আসামি করা হয়েছে। মাদকের সাথে আমার স্বামী জড়িত নয়। এর তথ্যপ্রমাণাদিও আমাদের কাছে আছে। হয়রানি থেকে মুক্তির জন্য তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
রুবি বেগমের মা নাজমা খাতুন বলেন, আমি আমার নাতিদের উপার্জন দিয়ে চলি, আমার কোন কেউ নেই, নাতি শামিম কাজ করে যে টাকা দেয় তা দিয়ে আমি কোন রকম চলি। ঐদিন তারে ডেকে নিয়ে গিয়ে আটক করি। আমরা খবর পেয়ে মা-মেয়ে অফিসে গেলে তারা আমাদেরকে গালাগালি করে, টাকা দাবি করে। আমি আমার নাতির মুক্তি চাই।
সংবাদ সম্মেলনে রুবি বেগমের বর্তমান স্বামী মাহবুব আলম বলেন, আমি একজন ব্যবসায়ি। মৌসুমি ফল ব্যবসা করি, ব্যবসা করে কোন রকম জীবনযাপন করছি। তারা যেদির আমার স্ত্রীর আগের ঘরের ছেলে শামীমকে আটক করে সেদিন আমি কলেজ গেইট বাজারে লিচু বিক্রি করছি। হঠাৎ আমাকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের শিবনাথ সাহা ফোন দিয়ে শামিমের আটকের সংবাদ দেয় এবং শামিমের সাথে ফোনে কথা বলায় দেয় ও অফিসে যেতে বলে। পরে আমার স্ত্রী বলে তুমি যেও না আমি আর মা যাই। তারা যাবার পরে তাদেরকে হেনস্তা করা হয়।
মাহবুব সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের কর্মকর্তারা পূর্বেই আমাকে নানাভাবে অন্য মানুষকে ধরিয়ে দিতে এবং নিজে যেনো ব্যবসা করি ও তাদেরকে চাঁদা দিই সে প্রস্তাবও দেন। এছাড়া মাদকদ্রব্যের গাড়ি চালক মিরাজ কয়েকদিন আগে লিচু ক্রয় করতে এসে আমাকে আটক করার হুমকি দিয়ে যায়।
এই বিষয়ে রাঙামাটির মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের এএসআই লিটন কুমার নন্দী বলেন, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শামিমকে ২০ পিস ইয়াবাসহ আটক করি এবং জিজ্ঞাসাবাদে এসব তার বাবা মাহবুব থেকে এনেছে বলে জানান। তিনি আরও বলেন, আমরা কাউকে হেনস্তা করিনি, টাকা দাবি করিনি, পুরোটাই মিথ্যা। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের চালক তাকে হুমকি দিয়েছিলো কি না আমার জানা নেই।
ইনচার্জ শিবনাথ কুমার সাহা এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আসামি শামীম জিজ্ঞাসাবাদে মাহবুবের নাম বলেন। এর আগেও মাহবুবের নামে মামলা রয়েছে।