পাহাড়ে পূর্ণ স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবিতে আন্দোলনরত পাহাড়ীদের সংগঠন ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এর সহযোগি সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দুই নেত্রীকে অপহরণ করার অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। সংগঠনটির জেলা সংগঠক সচল চাকমা রবিবার দুপুর বারোটায় ইমেইলে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি করেছেন। এই সময় আরেক সহযোগি সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের এক নেতাকে গুলি ও একটি মেসে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। অপহৃতরা হলেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মন্টি চাকমা ও কেন্দ্রীয় সদস্য দয়াসোনা চাকমা। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ধর্মসিং চাকমা। আহত ধর্মসিং কোথায় আছে জানায়নি ইউপিডিএফ।
ইউপিডিএফ এই ঘটনার জন্য তাদের সংগঠন থেকে বেরিয়ে গিয়ে পৃথক সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) কে দায়ি করেছে। তবে ইউপিডিএফ (গনতান্ত্রিক) এর এর কারো বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
বিবৃতিতে সচল চাকমা বলেন, ‘ সকাল সোয়া নয়টার দিকে সন্ত্রাসীরা খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়ক থেকে কয়েক শ’ গজ দূরে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নেতা ধর্ম সিং চাকমাদের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। দুর্বৃত্তরা ছাত্রদের একটি মেসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং জঙ্গী গোষ্ঠী বোকো হারামের স্টাইলে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মন্টি চাকমা ও কেন্দ্রীয় সদস্য দয়াসোনা চাকমাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে আবাসিকের বৌদ্ধ মন্দিরের পাশ দিয়ে খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়কের পর্ব পাশের জঙ্গলে নিয়ে যায়।’ ইউপিডিএফ নেতা উক্ত হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত ও ন্যাক্কারজনক’ অভিহিত করে বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিকভাবে ইউপিডিএফ-কে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে তার উত্থানকে রুদ্ধ করতে চাইছে।’
ইউনাইটেডপিপল্স ডেমোক্রেটিকফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) প্রচার ও প্রকাশনাবিভাগ নিরন চাকমার সাক্ষরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে অপহরণ ও হামলার প্রতিবাদে ও অপহৃতদের মুক্তির দাবিতে ইউপিডিএফ সমর্থিত তিন সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ ও ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি তাৎক্ষণিকভাবে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করেছে।
এবিষয়ে রাঙামাটির কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ সত্যজিৎ চৌধুরী জানিয়েছেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি এবং আমাদের ফোর্স ওই এলাকায় গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, মাসছয়েক আগে ইউপিডিএফ এর সাবেক কিছু নেতাকর্মী মিলে ইউপিডিএফ (গনতান্ত্রিক) নামে পৃথক আরেকটি সংগঠন গঠন করে। এই সংগঠনের হামলায় এযাবৎ ছয়জন মূল ইউপিডিএফ কর্মী নিহত হয়েছে। নিহতরা প্রায় সবাই সংগঠনটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন।
1 Comment
??