পাহাড়ের ইতিহাসে সবচে ভয়াবহ দিনটি হল ১৩জুন। টানা বৃষ্টিতে রাঙামাটির বিভিন্ন জায়গায় ধসে পড়ে পাহাড়। রাস্তাঘাট ভেঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে দেশের সাথে। বিধ্বস্ত এক জনপদে পরিণত হয় রাঙামাটি। পানি, বিদ্যুৎ, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যের অভাবে চারদিকে হাহাকার বাড়তে থাকে। ঘটনার তিনদিন পর অবশেষে দেখা মিলে বিদ্যুতের। বিদ্যুৎ এলে আসে পানিও। তবে যোগাযোগ স্বাভাবিক হতে সময় লাগে প্রায় দশদিনের মতো।
১৩ জুন সেদিনে দুর্ঘটনায় জেলা জুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাঙামাটি জেলার ১০টি উপজেলা, ২টি পৌরসভা, ৫০টি ইউনিয়ন কম বেশি ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। বেশি ক্ষতির শিকার হয় সদর উপজেলা ও পৌর এলাকা। রাঙামাটি জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে এই জেলার মোট ১৮,৫৫৮টি পরিবারের ১,২৩,১২৭ জন লোক পাহাড় ধস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া রাঙামাটি জেলায় এই দুর্ঘটনায় মোট ১২০ জন নিহত এবং ১৯২ জন আহত হয়।
রাঙামাটি জেলা জুড়ে ১০টি উপজেলা, ০২টি পৌরসভা, ৫০টি ইউনিয়ন মিলে ২৭০৮.৯২ বর্গ কি:মি: এলাকা খুব বেশি, ৪.৫০ বর্গ কি:মি: এলাকা বেশি এবং ১১.৫০ বর্গ কি:মি: এলাকা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ১,২৩,১২৭ জন, মৃতের সংখ্যা ১২০ জন, খুব বেশি আহত ১০৭ জন, বেশি ১৮জন, আংশিক ৬৭জন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ১৮,৫৫৮টি, সম্পূর্ণরুপে বিধ্বস্ত বাড়ির সংখ্যা ১,২৩১টি, আংশিক রুপে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা ৯,৫৩৭টি, গবাদি পশুর ক্ষতি ৩৪টি, ২৮,৪৬,০০০ টাকা, হাঁসমুরগীর ক্ষতি ১৩,৫৭০টির ২৯,৯৮,০০০ টাকা, ফসলাদি বিনষ্ট ১৮৯৯.৩১ হেক্টর জমি, ধ্বংসপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে স্কুল/মাদ্রাসা ০৭টি, কলেজ ০১টি, আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্কুল/মাদ্রাসা ৪৯টি, কলেজ ০১টি, ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদ/মন্দির ০৯টি, ধ্বংসপ্রাপ্ত সড়ক ৯.৪২ কি:মি: পাকা রাস্তা, ক্ষতিগ্রস্ত বন ২৫,৬৬,০০০টাকা, ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ ৫,৪৯,৩৮,৫০০টাকা, ক্ষতিগ্রস্ত টেলিযোগাযোগ তার ১,১৯,০০,০০০ টাকা, মৎস্য খামার ৪৩টি, ক্ষতি ৩১,০৩,০০০টাকা, ক্ষতিগ্রস্ত নলকুপসমূহের মধ্যে অগভীর নলকুপ ২৪৮টি, হস্তচালিত নলকুপ ২১৯টি, পুকুর/জলাশয় ক্ষতি হয়েছে ৩০টি।
রাঙামাটি মানুষের সেদিনের ঘটনা আর স্মরণে রাখতে না চাইলেও বার বার ফিরে আসছে সেই দিনটি। সেদিনের সেই ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে রাঙামাটির মানুষ। কেউ হারিয়েছে তার পরিবার, কেউ বসতবাড়ি, কেউবা তার শরীরের কোনও একটি অংশ হারিয়েছে।
2 Comments
very sad
সামনের দিন গুলোর জন্য চিন্তা হচ্ছে….