প্রতি বছরের মতো এ বছরও কাপ্তাই হ্রদে মৎস আহরণের উপর জেলা প্রশাসনের আরোপ করা তিনমাসের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩১ জুলাই। সেই হিসেবে ১ আগষ্ট থেকেই কাপ্তাই হ্রদে ফের মাছ আহরণ শুরু হওয়ার কথা। ইতোমধ্যেই নির্ধারিত তারিখেই মাছ ধরা শুরু নির্দেশনাও ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসক। কিন্তু প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না কাপ্তাই হ্রদের মাছ ব্যবসার নিয়ন্ত্রনকারি ব্যবসায়িদের সংগঠন ‘রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ি বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড’।
কারণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পূর্বেই জেলা প্রশাসক,বাংলাদেশ মৎস উন্নয়ন কর্পোরেশন,মৎস প্রতিমন্ত্রী,স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে তারা আবেদন জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞার এই মেয়াদ যেনো আরো অন্তত ২০ দিন বাড়ানো হয়। কারো সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করে,আবার সবার কাছে লিখিত আবেদন জানিয়ে, মৎস ব্যবসায়িরা বলেছিলেন, ‘ এবছর নির্ধারিত সময়ের বেশ পরে বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় কাপ্তাই হ্রদের মাছের স্বাভাবিক প্রজনন ব্যহত হয়েছে, হ্রদে ছাড়া পোণার আকার বৃদ্ধিও সন্তোষজনক নয়। ফলে আরো অন্তত ২০ দিন সময় পেলে মাছগুলো সাইজে আরো বড় হবে এবং সবাই লাভবান হবেন।’ একই সাথে ‘ আসন্ন কোরবানির ঈদের ঠিক আগমুহুর্তে জেলেদের ঠিকমতো কাজে লাগানো পরিপূর্ণভাবে সম্ভব নয়’ এবং উজান থেকে নামা পানির কারণে হ্রদের জলও এখন ‘বেশ ঘোলা’, জানিয়ে মৎস ব্যবসায়িরা অভিযোগ করেছেন, তাদের অনুরোধ আমলে না নিয়ে প্রশাসন অনেকটা জোর করেই নির্ধারিত সময়েই মাছ আহরণের ঘোষণা দিয়েছেন।
মৎস ব্যবসায়িদের প্রধান সংগঠন হিসেবে পরিচিত ‘রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ি বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড’ এর সভাপতি মোঃ হারুনুর রশীদ জানিয়েছেন, এবছর যথাসময়ে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি না পাওয়ায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন ব্যহত হয়েছে এবং মাছের রেণুপোনা ঠিকমতো বিকশিত হয়নি, এখনো পোকা আকারে থাকা এসব মাছ আহরণ করলে সরকার রাজস্ব হারাবে এবং ব্যবসায়িরাও বাণিজ্যিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও মাননীয় মৎস প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষন করছি,যেনো অন্তত ২০ দিন পিছিয়ে ২০ আগষ্ট থেকে মাছ আহরণের নির্দেশনা দেয়া হয়। ’
সংগঠনটির সাধারন সম্পাদক উদয়ন বড়–য়া জানিয়েছেন, ‘ আগামী ১২ আগষ্ট পবিত্র ঈদুল আজহা। ১ আগষ্ট থেকে মাছ ধরা চালুর ঘোষণা দেয়া হলেও জেলেদের ঈদের আগমুহুর্তে হ্রদে নামানো এবং ঈদের ছুটি দিয়ে আবারো পুনরায় হ্রদে নামাতে আমাদের ডাবল খরচ হবে এবং পুরো কাজও ব্যহত হবে। একই সাথে এ বছর বৃষ্টিপাত দেরীতে হওয়ায় হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে দেরীতে,মাছের বৃদ্ধিও ব্যহত হয়েছে। ফলে মাছ ধরার ঘোষণাটি ২০ দিন পিছিয়ে ঈদের পরেই শুরু করলে সবার জন্য ভালো হয়।’
সভাপতি-সম্পাদক দুজনই জানিয়েছেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপির সাথে তারা বিষয়টি নিয়ে সাক্ষাৎ করেছেন এবং এমপি বিষয়টি সম্পর্কে স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধও করেছেন।
তবে কাপ্তাই হ্রদের মাছের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালনকরা বাংলাদেশ মৎস উন্নয়ন কর্পোরেশন এর ব্যবস্থাপন পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরবে যাওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। জানা যায়নি,চিকিৎসার জন্য ভারতে থাকা স্থানীয় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারের বক্তব্যও।