‘ভোট ডাকাতি রুখতে ব্যালট বক্স পাহারা দিবে ছাত্রলীগ’

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ছাত্র রাজনৈতিক দলগুলো ভাবনা ও কার্যক্রম নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের তৃতীয় পর্বে আমরা কথা বলেছি জাতির আন্দোলন-সংগ্রামের সাথে জড়িয়ে থাকা ছাত্র সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ এর নেতাদের সাথে।
বাংলাদেশ নামক প্রিয় এই মাতৃভূমির স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন-সংগ্রামে অংশগ্রহণ করা অন্যতম একটি ছাত্র সংগঠনের নাম হচ্ছে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র হাত ধরে এ ছাত্র সংগঠন দেশের বিভিন্ন ক্লান্তিলগ্নে জাতির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে গিয়েছেন। বর্তমানে এই ছাত্র সংগঠনটি দেশের ক্ষমতাশীল দল আওয়ামীলীগের সাথে অঙ্গ-সহযোগি সংগঠন হিসেবে কাজ করছে।
২৯৯ রাঙামাটি আসনে আওয়ামীলীগের এবারের প্রার্থী পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। তিনি এ পর্যন্ত এই আসনে পাঁচবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তিনবার জয়যুক্ত হয়েছেন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী ঊষাতনের কাছে হেরে যান। তাই এইবার হারানো আসনটি ফিরে পেতে মরিয়া দলটির নেতাকর্মীরা।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাঙামাটি জেলার সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন বলেন, ‘গত নির্বাচনে পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্রধারীরা ভোট কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতি করে নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করেছে। তবে এবার আর সেটা করতে পারবে না তারা। আমরা ছাত্র সমাজকে সাথে নিয়ে ভোট ডাকাতি রুখে দিতে ব্যালট বক্স পাহারা দিবো।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার রাঙামাটিতে তাদের প্রার্থী জয় না হওয়ার পরেও উন্নয়নের কমতি রাখেনি। আওয়ামীলীগের হাত ধরে এখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ হয়েছে। আমাদের প্রার্থী দীপংকর তালুকদার ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাচিত হলে রাঙামাটিতে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ করা হবে। তাই ছাত্র সমাজ নিজেদের জন্য এবং পাহাড়ে এই শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আগামী ৩০ তারিখ নৌকা মার্কায় ভোট দিবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দলের প্রার্থী ঊষাতন তালুকদার গত পাঁচ বছরে রাঙামাটির জন্য কি করেছে আমরা সবই জানি। কোথাও তিনি একটি ইটও বসাতে পারেনি। অন্যদিকে আমরা রাঙামাটিতে ক্ষমতায় না থাকার সত্ত্বেও উন্নয়নের কাজে ছিলাম। আমরা সব সময় জনগণের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। তাই আমাদের গণজোয়ার এখন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি জুড়ে। সে জন্য আমরা আশা করি আগামী ৩০ ডিসেম্বর রাঙামাটিবাসী নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদেরকে জয়যুক্ত করবে।’
রাঙামাটি সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ছাত্রদের অধিকার আদায় নিয়ে রাজনীতি করি। তাই ছাত্রদের কথায় বলি আমরা। রাঙামাটিতে আগে বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ার জন্য জেলার বাইরে যেতে হতো। দরিদ্র পরিবারের সন্তানরা বাইরে যেতে পারবে না বলে পড়ালেখা ছেড়ে দিতো। কিন্তু বর্তমানে রাঙামাটির শিক্ষার্থীরা ঘরে থেকে বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। তারা ঘর থেকে খেয়ে-পড়ে বিশ^বিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ করে দেয়া একমাত্র সম্ভব হয়েছে আওয়ামীলীগ সরকারের কারণে। তাই উন্নয়নের এই ধারা অব্যহত রাখতে রাঙামাটিবাসী নৌকা মার্কায় ভোট দিবে।’
পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আলাউদ্দীন বলেন, ‘ভোটের দিন অবৈধ অস্ত্রধারি এবং বিএনপি-জামাতের লোকেরা অশান্তি পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে। তাই আমাদের ওপর নির্দেশ আছে আমরা যেনো তাদের এই ফাঁদে পা না দিই। আমরা চাই সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন হোক। নেত্রী ইতিমধ্যে বলে দিয়েছেন তিনি সুন্দর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চান। তাই আমরাও তার সে নির্দেশ পালনের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ড এবং ইউনিট পর্যন্ত বৈঠক করে তার এই বক্তব্য ছড়িয়ে দিয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘পাহাড়ে শান্তির যে বাতাস বইছে তা রক্ষা করার জন্য আমরা সকলে মিলে চাই সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন হোক। জনগণ বর্তমান বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য নৌকা মার্কায় ভোট দিবে। তাই আমরাও চাই জনগণের ভোটের মাধ্যমে জয়যুক্ত হয়ে জনগণের সেবা করবো।’