বান্দরবানের লামা উপজেলায় বানোয়াট অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা দিয়ে ভাবীর বিরুদ্ধে দেবর ও ননদকে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মূলত মৃত শাশুড়ির জায়গা আত্মসাতের লক্ষে মামলা দিয়ে এ হয়রানি করছেন বলে জানান ভুক্তভোগী ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বড়ছন খোলা গ্রামের বাসিন্দা নুর আহমদের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন ও মেয়ে জাহানারা বেগমসহ পরিবারের অন্যরা। বানোয়াট অভিযোগে দায়ের করা মামলা থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর হোসেনসহ অন্যরা।
অভিযোগে জানা যায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি বড়ছনখোলা গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলামের ১০ বছর বয়সী ছেলে ওসমান সহ ৩জন মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষকের ভাত আনার জন্য জনৈক নুরুল আলমের বাড়িতে যায়। এ সময় তারা একে অপরকে কথা বলাবলির সময় ওসমানকে মারধর করেন কুলছুমা বেগম। পরে এ ঘটনায় শিক্ষককে নালিশ দেন ওই ছাত্ররা। এর জের ধরে কুলছুমা বেগম, নুর হোছাইন, সাইমুন ইসলাম ও আমির হেসেন সংঘবদ্ধ হয়ে একই দিন রাত ১১টার দিকে ননদ জাহানারা বেগমের ঘরে হামলা করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন জাহানারা বেগম। এদিকে একই ঘটনাকে ভিন্নভাবে প্রভাবিত করে উল্টো পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন পাড়া কেন্দ্রের আসবাবপত্র ভাংচুর ও মারধর করেছে মর্মে বানোয়াট অভিযোগ তুলে গত ৩ মার্চ উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেবর ননদের স্বামী নজরুল ইসলাম (৩৩), দেবর মনজুর আলম (৪৫), জাহাঙ্গীর আলম (৩৫), ননদ জাহানারা বেগম (৩০) ও দেবরের স্ত্রী কোহিনুর আক্তারকে (৩০) বিবাদী করে মামলা দায়ের করেন কুলসুমা বেগম।
ঘটনাস্থল পাড়া কেন্দ্রের লাগোয়া বাসিন্দা মো. ইদ্রিসের ছেলে মো. জকরিয়া (৩৫), মো. ফেরদৌসের স্ত্রী কলমা খাতুন (৫৫) ও আব্বাস আহমদের ছেলে এনায়েত উল্লাহ (৫২) বলেন, ছোট শিশুদের কথা বলাবলি নিয়ে জাহাঙ্গীর আলম ও কুলসুমা বেগম পক্ষের মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই সময় কোন ধরণের মারধর কিংবা পাড়া কেন্দ্রের জিনিসপত্র ভাংচুরের ঘটনা ঘটেনি। তারা আরো জানান, মৃত নুর আহমদের স্ত্রী মরিয়ম খাতুন ২০১১ সালের ৪ অক্টোবর মোহাং ইদ্রিসের কাছ থেকে ২০ শতক জায়গা ক্রয় করেন। এরপর ক্রয়কৃত জায়গার মধ্যে ৬ শতক জায়গা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালনাধীন পাড়া কেন্দ্রের জন্য চুক্তিমূলে দান করেন মরিয়ম খাতুন। তৎসময়ে পাড়া কেন্দ্রের শিক্ষিকা নিয়োগ পান মরিয়ম খাতুনের সৎ ছেলের স্ত্রী কুলসুমা বেগম। বার্ধক্যজনিত কারণে ২০১৯ সালে মরিয়ম খাতুন মারা যান। মৃত্যুর এক বছর পর ওই জায়গা শ্বাশুড়ী থেকে কিনেছেন বলে দাবি করছেন কুলসুমা বেগম। এ নিয়ে কুলসুমা বেগমের সাথে দেবর ননদসহ অন্যদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
তবে অভিযুক্ত কুলসুমা বেগম বলেন, ২০১১ সালে মেয়ের বিয়ের সময় আমার শাশুড়ী ৬ শতক জায়গা স্থানীয় চেয়ারম্যান মো. জাকের হোসেন মজুমদারের উপস্থিতিতে আমার কাছে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। শাশুড়ী মারা যাওয়ার পর ক্রয়কৃত জায়গার না দাবি নামা চাইলে ওয়ারিশরা আমাকে গালমন্দ করার পাশাপাশি মারধর করেন।
এ বিষয়ে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবদুর রহিম বলেন, জায়গা নিয়ে কুলসুমা বেগমের সঙ্গে পরিবারের অন্যদের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। তবে মারধরের ঘটনা ঘটেনি।