দেখতে অনেকটা লাউয়ের মত। তবে নিঃসন্দেহে জাতও কিন্তু লাউ। কারণ লতা আর পাতা উভয়ই লাউ গাছের মত একই এবং গন্ধটাও এক। যার শাক লাউ শাকের মত রান্না করেও খাওয়া যায়। স্থানীয় (চাকমা) ভাষায় যার নাম ‘বাস’। এটি স্বাদের দিক থেকে দু-প্রজাতির হয়ে থাকে এবং গঠনগত দিক থেকে দু-তিন প্রজাতির হয়। স্বাদের দিক থেকে একটি হলো তিক্ত আর অপরটি হলো লাউয়ের মত মিষ্টি। যেটি মিষ্টি সেটি কঁচি অবস্থায় ঠিক লাউ হিসেবে রান্না করে খাওয়া যায়।
তবে যদিও এটি রান্না করে খাওয়া যায় তথাপি সবজি হিসেবে চাষ করা হয় না। এটি মূলত ফলের খোলসটা কলসির বিকল্প হিসেবে পানি রক্ষায় ব্যবহারের জন্য চাষ করা হয়ে থাকে। এটি কলসির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করার কারণ হলো বাস’র খোলসে পানি রাখলে পানি স্বাভাবিক ঠান্ডা থাকে। গরমকালেও পানি গরম হয়না। বিশেষ করে বসন্ত ও গ্রীষ্মকালের খরাতে পানি টেষ্টায় এ বাস খোলসের পানি খুবই সুস্বাদু লাগে এবং টেস্টা মেটে। তাই এটি পাহাড়িদের কাছে জনপ্রিয় একটি প্রাকৃতিক বস্তু।
বাস ফরের ব্যবহার উপযোগী প্রক্রিয়াঃ বাস ফল যখন পরিপক্ক হয় তখন বাস’র গলার উপরের অংশে রিং সিস্টেমে কেটে একটি ছিদ্র করা হয়। অতঃপর ভিতরের নরম অংশ বা শাঁচ কিছুদিন পঁচিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়। এতে বাস’র খোলস তৈরী হয়। এবার খোলসের পঁচার দুর্গন্ধ সাড়াতে কয়েকদিন পরিষ্কার পানিতে ডুবিয়ে রাখলে আর দুর্গন্ধ থাকে না। ফলে খোলস ব্যবহার উপযোগী হয়ে থাকে।
এটি পানি ঠান্ডারাখা ছাড়াও সম্পূর্ণ হালকা হওয়ায় পরিবহণের সুবিধাও রয়েছে। তাছাড়া এটি টেকসই এবং সহজে ভাঙে না। কিন্তু বর্তমানে এটি বিলুপ্ত প্রায়। ছোটকালে দেখেছি, খেয়েছি, সৌন্দর্যের মুগ্ধতায় ব্যবহারও করেছি। কিন্তু আজ অনেক বছর পর আমার এনজিও জীবনের শ্রদ্ধাভাজন এক সহকর্মীর ফেসবুক পোস্টে পেয়েছি এ ‘বাস’ ফলের সন্ধান। তাই এটির কথা মনে পড়ল এবং এর উপর কিছু লিকতে আগ্রহ জাগলো। তবে যেটি পেয়েছি বা নিউজে পোস্ট করেছি সেটির গঠন তেমন সুরুচিপূর্ণ না। এর চাইতেও অনেক মুগ্ধকর প্রজাতির ‘বাস’ রয়েছে। যার লালসার সন্ধান গ্রামে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাওয়া যেতে পারে।