
রাঙামাটির বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ গ্রাহকদের একদিনের মধ্যেই মাসিক বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সময় বেধে দিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছে গ্রাহকরা। তবে জেলা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ এ ঘটনা স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
অভিযোগ জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ও বিকালে রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুৎ গ্রাহকদের বাসায় বাসায় মাসিক বিদ্যুৎ বিল পৌঁছে দেয় বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের কর্মচারীরা। এতে করে দেখা যায়, গেল জুন মাসের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের শেষ সময় নির্ধারণ করে দেয়া আছে ১৪ জুলাই। অথচ গেল বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকালে মাসিক বিল গ্রাহকদের বাসায় পৌঁছিয়ে দিলে বিল পরিশোধের সময় মাত্র তিনদিন! এর মধ্যে শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটির দিন। সে হিসেবে বিল পরিশোধের সময় মাত্র একদিন রোববারই।
গ্রাহক জানায়, যেকোনো বিল পরিশোধের জন্য নূন্যতম সময় দেয়া উচিত কর্তৃপক্ষকে। বিদ্যুৎ বিভাগের একদিনের মধ্যে বিল পরিশোধের সময় বেধে দেয়া গ্রাহকদের সাথে তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাদের অভিযোগ, গত ক’দিন ধরে রাঙ্গামাটিতে ভারী ও হালকা বর্ষণ চলছে। এতে করে বিল পরিশোধের জন্য শুধুমাত্র একদিন সময় বেধে দেওয়া কোনো ভাবেই যৌক্তিকতা নয়। এমন ঘটনা বিদ্যুৎ বিভাড়ের গাফিলতিইে ঘটেছে।
এদিকে গতকাল রোববার বিল পরিশোধের সময় একদিনের কারণে শহরের তবলছড়ি রূপালী ব্যাংকে গ্রাহকদের দীর্ঘ সারি লক্ষ্য করা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের অতিরিক্ত চাপের কারণে ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়।
কয়েকটি বিদ্যুৎ বিলের কপি যাচাই করে দেখা যায়, বিল ইস্যুর তারিখে উল্লেখ্য আছে গেল জুন মাসের ১৪ তারিখ। বিল পরিশোধের শেষ তারিখে উল্লেখ্য আছে চলতি জুলাই মাসের ১৪ তারিখ। তবে কী কারণে গ্রাহকদের কাছে বিল কপি পৌঁছাতে এতটা সময় লেগেছে সে বিষয়ে সঠিক উত্তর দিতে পারেনি বিদ্যুৎ বিভাগ। বিদ্যুৎ বিভাগ দাবি করছে, রাঙামাটি জেলার বিল প্রস্তুত করা হয় চট্টগ্রাম থেকে।
আব্দুল জলিল নামের গ্রাহক বলেন, একদিনের মধ্যে মাসিক বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়া আমাদের সাথে অবিচার করা। বিদ্যুৎ বিভাগের এমন কার্যক্রম কান্ড জ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছে।
আহম্মেদ রাফি নামের আরেক গ্রাহক বলেন, আমরা নিয়মিত প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে থাকি। যেভাবে একদিনের সময় বেধে দিয়ে বিল দিতে বলা হচ্ছে তা খুবই লজ্জাজনক। আমাদের বিভিন্ন কাজ থাকতে পারে। হাতে সময় মতো টাকাও না থাকতে পারে। তাই একদিনের মধ্যে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা কঠিন ব্যাপার।
বিদ্যুৎ গ্রাহক সালামত আলী বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের এমন কর্মকান্ড কোনো ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তারা প্রায় মাসে এমন ঘটনা ঘটিয়ে আসছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড রাঙামাটি বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার বলেন, ‘গ্রাহকরা বিদ্যুৎ বিল দেরিতে পাওয়ার অভিযোগ আমরা সব সময়ই পাই। এমনকি এ অভিযোগ সত্য। এবার হয়তো বৃষ্টির কারণে বিল পৌঁছাতে দেরি হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে বিল বিতরণকারীদের যথেষ্ট গাফিলতি রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি প্রিপেইড মিটার চালু করার। প্রিপেইড মিটার চালু করা হলে গ্রাহকদের এমন অভিযোগ আর থাকবে না।’