বারবারই নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হওয়া রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার তুচ্ছ ঘটনায় তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। বিজয় দিবসের দুপুরের বিশেষ খাবার নিয়ে এবার বিরোধে জড়িয়ে পড়েছিলেন প্রক্টর ও কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান জুয়েল শিকদার এবং ছাত্র হলের হলসুপার মহিউদ্দিন আল মহিম ছন্দ। শিক্ষক-কর্মকর্তার এই বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরাও। ছাত্র হলে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে হলসুপারকে। সন্ধ্যায় হলসুপার হলে এলে তাকে বের করে দেয় শিক্ষার্থীরা। ভেঙ্গে ফেলা হয় তার রুমের তালাও।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বিজয় দিবসের দিন দুপুরে সারাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের মতো রাবিপ্রবিতেও হলের আবাসিক ছাত্রদের জন্য বিশেষ খাবারের আয়োজন করা হয় এবং তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেয়া হয় সহকারি হলসুপার ছন্দকে। দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রক্টর জুয়েল শিকদারসহ শিক্ষকরা খাবার খেতে আসলে তাদের ছন্দের নিষেধের কারণে খাবার দিতে অস্বীকৃতি জানান হল কর্মচারিরা। শিক্ষকরা জানতে পারেন, হলের কর্মচারিদেরকে শিক্ষকদের খাবার না দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন সহকারি হল সুপার ছন্দ,এনিয়ে প্রক্টর ও ছন্দের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যালাপ এবং তার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে অস্থায়ী ক্যাম্পাসেও। দুপুরে না খেয়েই হল ছাড়েন প্রক্টর। এসময় ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে অপমান করার অভিযোগ এনে হল সুপার ছন্দের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। পরে সন্ধ্যায় এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হলেও সেখানেও বিষয়টির সুরাহা হয়নি বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র।
এই ঘটনার জের ধরে ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরাও শিক্ষকের পক্ষে অবস্থান নেন এবং তারা ছন্দকে হল সুপার পদ থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। রাতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, শিক্ষককে অপমাণের প্রতিবাদের রবিবার মানববন্ধন করবেন তারা এবং ভিসিকে স্মারকলিপি দিবেন। এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে কর্মসূচী দেয়ার কথা জানিয়েছে একজন শিক্ষকও।
এই ব্যাপারে প্রক্টর জুয়েল শিকদার বলেন, সে আমার পদমর্যাদা ও একজন শিক্ষকের সাথে কেমন আচরণ করতে হয় সেটাও জানেনা। সে যা করেছে তা অত্যন্ত অবমাননাকর। বিষয়টি নিয়ে আমরা বসেছি এবং ভিসি স্যারকে জানিয়েছি। দেখি কি পদক্ষেপ নেয়া হয়।
অন্যদিকে সহকারি হল সুপার মহিউদ্দিন আল মহিম ছন্দ জানিয়েছেন, ‘আমাকে খাবারের জন্য যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিলো তা পর্যাপ্ত ছিলোনা,তাই আমি ছাত্র ছাড়া কাউকে খাবার দিতে মানা করেছিলাম, তাই প্রক্টরের দায়িত্বে থাকা সিইসি বিভাগের প্রধান জুয়েল শিকার খাবার চাইলে কর্মচারিরা তা দেয়নি। এনিয়ে প্রক্টরের সাথে আমার সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে। পরে আমি সংশ্লিষ্ট কর্মচারিকে দিয়ে খাবার পাঠালেও তিনি আর তা গ্রহণ করেননি। পরে সন্ধ্যায় আমাকে প্রক্টরিয়াল বডি ডেকে পাঠালে আমি গিয়েছি এবং আমার অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। এটা আসলে একটি নিছকই ভুল বোঝাবুঝি ছিলো,তিনি কোন কারণে আমাকে ভুল বুঝেছেন।’
এদিকে আবাসিক হলের বেশ কয়েকজন ছাত্র রাতে পাহাড়টোয়েন্টিফোর ডট কমকে জানিয়েছেন, সহকারি হল সুপার ছন্দ ‘স্থানীয়’ দাবি করে হলের শিক্ষার্থীদের সাথে কুকুর বিড়ালের মতো আচরণ করেন এবং নিজেকে সবসময় রাঙামাটির বিশেষ প্রভাবশালীদের ঘনিষ্ঠ দাবি করে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেন। শুধু প্রক্টর জুয়েল শিকদারই নয়,অতীতে আরো অনেকের সাথেই তার বিরোধ হয়েছে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।