
বিপর্যস্ত রাঙামাটি স্বাভাবিক হয়ে আসলেও এখনো সড়ক বিচ্ছিন্নতার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছে জেলার কৃষি, পরিবহন সেক্টরের লক্ষাধিক মানুষ। মধু মাসে চাষি বিভিন্ন ফল নিয়ে ঘাটে আসলেও ক্রেতার অভাবে বেশিরভাগ ফলই অবিক্রি থেকে যাচ্ছে। ফলের মৌসুমে চাষিরা পণ্য পরিবহন করতে না পারায় এখন সব দিকই হারিয়েছেন এইসব প্রান্তিক চাষি। একদিকে ফলের বাগান নষ্ট, আরেক দিকে যা রয়েছে তাও দ্রুত বিক্রি করতে না পারলে পঁচে যাওয়ার শঙ্কা। একমাত্র প্রধান সড়কটি চলাচল উপযোগীর ওপরই নির্ভর করছে প্রান্তিক চাষিদের ভাগ্য।
গত ১৩ জুন রাঙামাটির ইতিহাসে ঘটে যায় সবচে বড় মানবিক বিপর্যয়। এই বিপর্যয়ে প্রাণ হারান পাহাড়ের শতাধিক মানুষ। এই ঘটনায় রাঙামাটির বিভিন্ন সড়কে ১৩৫টি স্পটে ভাঙ্গন দেখা দেয়। যার মধ্যে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কে ১০০ মিটার সড়ক পুরোপুরি ধসে পড়ে। বিছিন্ন হয়ে যায় যান চলাচল। এতে রাঙামটি থেকে বিভিন্ন কাঁচামালসহ অন্যান্য পণ্য পরিবহন অসম্ভব হয়ে পড়ে। দুর্ভোগে পড়ে প্রান্তিক চাষিরা। বিভিন্ন উপজেলা থেকে পণ্য নিয়ে আসলেও পরিবহন সঙ্কটে বেপারিরাও পণ্য ক্রয় করছেন না। এতে ঘাটে বসে রয়েছেন চাষি।
সমতাঘাটে কলা নিয়ে বসে থাকা রবি মোহন চাকমা জানান, তিন-চারদিন ধরে ঘাটে বসে আছে। কেউ পণ্যের দরদামও করছেন। তিনি জানান, যোগাযোগ বন্ধের কারণে ঘাটে ক্রেতা না থাকায় বসে রয়েছেন। অল্প অল্প করে পণ্য আনার পরও পণ্য বিক্রি হচ্ছে না।
ব্যবসায়ী বাবলা চক্রবর্তী জানান, কুতুকছড়ির ৪০ মিনিটের রাস্তা এখন তিন ঘণ্টা ঘুরে নৌপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে পণ্য নিয়ে যাওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সমতাঘাটে ফল শ্রমিক আব্দুল কুদ্দুস জানান, সড়ক ঠিক না হওয়ায় ফল নেয়া যাচ্ছে না। এজন্য ঘাটে বসে থাকা ছাড়া কোনও কাজ নেই।
কলেজ গেইট এলাকায় ফল বিক্রিতা ইয়াছিন বালেন, বেচা কেনা নাই, কাঠাল, আম, আনারস পচে যাচ্ছে।
রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অরুণ কান্তি চাকমা বলেন, ফল মৌসুমে পণ্য পরিবহন করতে না পারায় মানুষ সবদিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একদিকে হ্রদের পানি বৃদ্ধিতে ধানের জমি ডুবে গেছে, অন্যদিকে কিছুদিন আগেও ঘূর্ণিঝড় মোরা’য় রাঙাামাটিতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এতে প্রান্তিক মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। সহসাই সড়কটি চালু করা না গেলে কৃষকরা আরো কষ্টে পড়বেন।