পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে সাংবাদিকদের পৃথক দুই প্রেসক্লাবের বিরোধ ধীরলয়ে প্রকাশ্যে আসছে। এর আগে প্রেসক্লাবের বিকল্প আরেকটি প্রেসক্লাব গঠনের পর এবার রুবেল-আনোয়ারের নেতৃত্বাধীন প্রেসক্লাবের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বয়কটের ঘোষনা দিয়েছে সুশীল-নন্দনের নেতৃত্বাধীন নতুন প্রেসক্লাব।
আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি ভবন নির্মাণে নানাভাবে ভূমিকা রাখা পাঁচজনকে সংবর্ধনা দেয়ার সব প্রস্তুতি শেষ করেছে পুরনো রাঙামাটি প্রেসক্লাব। সংবর্ধনা আয়োজনের ঠিক দুইদিন আগে এক জরুরী সভা করে সেই অনুষ্ঠান অংশগ্রহণ না করা এবং অনুষ্ঠানের সংবাদ প্রচার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নতুন প্রেসক্লাবের ৩৮ জন সদস্য।
নতুন প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘ প্রবীণ সাংবাদিক একেএম মকছুদ আহমেদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে বুধবার সকালে কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় রাঙামাটি প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা। এ সভায় বলা হয়, আগামী ৫ ফেব্রুয়ারী প্রবীণ সাংবাদিক একেএম মকছুদ আহমেদের সংবর্ধনার আয়োজন করেছে তথা কথিত নাম -সর্বস্ব প্রেসক্লাব। একে এম মকছুদ আহমেদ অবশ্যই একজন আদর্শ সাংবাদিক। তিনি দীর্ঘ যুগ ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে সাংবাদিকতা করে আসছেন। সাংবাদিকতায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি যেখানে সাংবাদিকদের সর্বোচ্চ আসনে থাকার কথা সেখানে তথাকথিত প্রেসক্লাবের বিতর্কিত কার্যক্রম ও তাঁর অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, রাঙামাটির মুল ধারার সাংবাদিকরা ’রাঙামাটি প্রেসক্লাব’ সে অনুষ্ঠানে যোগদান করা তো দুরের কথা, সে অনুষ্ঠানের কোন সংবাদই পরিবেশন করবে না। প্রেসক্লাব এমন দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেয় প্রেসক্লাবের ৩৯ জন সদস্য কেউই সেখানে উপস্থিত থাকবেন না।
যারা সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অমান্য করে সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সেখানে যারা উপস্থিত থাকবেন তাদের বিষয়ে রাঙামাটি প্রেসক্লাব গভীর পর্যবেক্ষণ করবে এবং প্রেসক্লাব তার করণীয় কাজ অব্যাহত রাখবে।
রাঙামাটি প্রেসক্লাব মনে করে, পরিবেশ তৈরি হলে রাঙামাটি প্রেসক্লাব তথা প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকরা একেএম মকছুদ আহমদকে বর্ন্যাঢ্য আয়োজনে সংবর্ধনা দেবে। সেখানে সকল পেশাদার সাংবাদিকের উপস্থিতি থাকবে।
কিন্তু কতিপয় ব্যাক্তি দিয়ে নামমাত্র ভাবে একটি ক্রেস্ট হাতে তুলে দিয়ে একেএম মকছুদ আহমদকে সংবর্ধনা দিলে মকছুদ আহমেদকে অপমান করা হবে মনে করে প্রেসক্লাব। সভায় মকছুদ আহমদের মঙ্গল কামনা করেন প্রেসক্লাবে নেতৃবৃন্দ।’
এই বিষয়ে তাৎক্ষনিক যোগাযোগ করা হলে পুরনো রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল পাহাড়টোয়েন্টিফোর ডট কম’কে জানিয়েছেন, ‘তারাতো আমাদের কেউ নয়, কেউ ছিলো না। তাদের বর্জনে তো আমাদের কিছু যায় আসে না। তারা কি করবে এটা তাদের ব্যাপার। এই বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না।’
রুবেল বলেন, তারা আমাদের একই নামে আরেকটি সংগঠন করলেই তো সবকিছু বৈধ হয়ে যায়না। তাদের সাথে আমরা কোন সংঘাত,ঝগড়া বা বিবাদে যাব না।’
প্রসঙ্গত, সাংবাদিকতায় অর্ধশতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে দৈনিক গিরিদর্পন সম্পাদক একেএম মকছুদ আহমেদকে, রাঙামাটি প্রেসক্লাব স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় কেডিএস এর চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, আজাদীর প্রবীন সাংবাদিক ওবায়দুল হক,রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান পারিজাত কুসুম চাকমা (মরনোত্তর) এবং চিংকিউ রোয়াজাকে সংবর্ধনা দিচ্ছে রুবেল-আনোয়ারের নেতৃত্বাধীন রাঙামাটি প্রেসক্লাব,যাতে নতুন ৭ সদস্যসহ বর্তমানে ২০ জন সাংবাদিক সদস্য হিসেবে আছেন। অন্যদিকে পেশাদার সাংবাদিকদের প্রেসক্লাবে সদস্যপদ না দেয়ার ঘটনার প্রতিবাদে জেলা শহরে কর্মরত ৩৮ জন সাংবাদিককে নিয়ে আরেকটি প্রেসক্লাব গঠন করেন সুশীল ও নন্দন দেবনাথের নেতৃত্বে আরেক দল সাংবাদিক।