রাঙামাটিতে স্মরণকালের ভয়াবহ পাহাড় ধসে ব্যাপক ধসে নেমেছে সব খাতেই। পর্যটন খাত থেকে শুরু করে মৌসুমী ফল চাষিরাও তা দেখে বিরত ছিল না।দুর্দশায় দিন কেটেছে পরিবহণ শ্রমিকদের।
পাহাড় ধসের কারণে জেলার সাথে গত ১৪ জুন অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সকল ধরনের যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। ভয়াবহ পাহাড়ধসে তলিয়ে যাওয়া ঘাগড়া শালবন এলাকার ১৫০ রাস্তা সেনাবাহিনী,সড়ক ও জনপথ বিভাগের অক্লান্ত পরিশ্রমে গত ২১জুন (বুধবার) হালকা যানবাহন চলার জন্য খুলে দেওয়া হয়। এরি মধ্যে গতকাল রোববার বিকালে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কটিও যাতায়াতের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে।
বিপর্যয়কালীণ সময়ে বাজারের কৃত্রিম সংকটও প্রশাসনের ভূমিকায় দুই-তিন দিন পর স্বাভাবিক হয়ে যায়। বিকল্প রুটে লঞ্চের মাধ্যমে যোগাযোগের ব্যবস্থা করে লঞ্চ মালিক সমিতি ও স্থানীয় প্রশাসন।
এদিকে রাঙামাটি থেকে চট্টগ্রামগামী বাসগুলো চলাচল করছে ঘাগড়ার পর থেকেই । সব মিলিয়ে এখন রাঙামাটি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক দিকে রূপ নিয়েছে।
এখনও জেলার মোট ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে দুই হাজারের মত মানুষ আশ্রিত আছে।আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাসরত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর এখন পুনর্বাসন করতে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান জানিয়েছেন, গতকাল বিকেল থেকেই রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। জেলার সাথে অভ্যন্তরীণ জেলা গুলোর সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হওয়াতে জনজীবন আরও স্বাভাবিক হয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষদের কথা জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করাটাই এখন আমাদের প্রধান কাজ। ক্ষতিগ্রস্ত অসহায়দের পুনর্বাসনের চিন্তা সরকার করছে। এসপ্তাহে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করার লক্ষে তিনটি বিশেষ কমিটি করা হবে। ইতি মধ্যে পুনর্বাসন করার জন্য আমরা জায়গা খুঁজছি।
নিরাপদ স্থানে পুনর্বাসন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরাতো এদের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে পুনর্বাসন করতে পারি না। আমরা আশ্রিতদের নিরাপদ ও ঠেকসই ভাবে পুনর্বাসন করবে।
উল্লেখ্য, ভারি বৃষ্টি ও প্রবল বর্ষণের ফলে গত ১২ ও ১৩জুন পাহাড় ধসে রাঙামাটিতে দুই সেনাকর্মকর্তা ও তিন সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় ২শ এর অধিক মানুষ। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় চরম বিপাকে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশুদ্ধ পানি ও জ্বালানি তেলসহ সকল নিত্যপন্যে কৃত্রিম সংকটে ভূগে রাঙামাটিবাসী। তবে ১৬ জুন (শুক্রবার) থেকে বিকল্প যোগাযোগ হিসেবে কাপ্তাই-রাঙামাটি রুটে তিনটি লঞ্চ চলাচলের ব্যবস্থা করে স্থানীয় প্রশাসন।