রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের ছাগলখাইয়া পাড়াকেন্দ্রের পাড়াকর্মী সানুখই মারমার সহযোগিতায় বন্ধ হলো বাল্যবিবাহ। পাড়াকর্মী সানুখই মারমা ঘটনার বর্ণানা দিয়ে বলেন, প্রতিদিনের মত গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাড়ি পরিদর্শনে গেলে জানতে পারি ১৪ বছর বয়সী একজন কিশোরীর বিয়ে ঠিক করা হয়েছে। মেয়েটি সবেমাত্র সপ্তম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। মেয়েটির বাবার সঙ্গে কথা বলতে না পারলেও মায়ের সাথে কথা বলি এবং প্রাাপ্ত বয়স্ক না হলে ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দেয়া যে আইনে নিষেধ আছে সেকথা তাদের আবার মনে করিয়ে দেই। পরিবার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে এমন ভাল পাত্র নাও পাওয়া যেতে পারে। পাত্র রাজমিস্ত্রির কাজ করে আয় রোজগার ভাল। কিশোরী একটি মেয়ের বিয়ে হয়ে যাবে এভাবনায় সারারাত ঘুমাতে পারেনি আমি।
পরেরদিন ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস লিখি, “বিয়ে খবরটা নিশ্চয় ভালো খবর, তবে শুনে মোটেও খুশি হতে পারিনি, কারণ আমরা উঠান বৈঠক, কিশোরী ক্লাব, বাড়ি পরির্দশন এছাড়া বিভিন্ন কার্যক্রমে মাধ্যমে সবসময় বাল্যবিবাহ বন্ধ বা রোধের কথা বলে এসেছি। কিন্তু আমার পাড়াকেন্দ্রের আওতাভুক্ত কিশোরী লিডারের বিয়ের কথা শুনে খুব কষ্ট পেয়েছি, যে কিশোরী সবে মাত্র ক্লাস সেভেনে পড়ে। যে কিশোরী নিজের সম্পর্কে সবে মাত্র জানতে শুরু করেছে। তার স্বপ্ন শুধু লেখাপড়া করা নয়। হয়ত জীবনের অনেক কিছু করা ইচ্ছা আছে। সেই কিশোরী পরিবারের উদ্য্যোগে বিয়েটা হবে। ভাবলে অবাক লাগে আমাদের উঠান বৈঠক, কিশোরী ক্লাব, বাড়ি পরিদর্শনে মাধ্যমে বাল্যবিবাহ বন্ধতো দূর করা গেলোই না বরং সব জেনে চুপ থাকতে কষ্ট হচ্ছে। আমাদের দেশে আদৌ কি বাল্যবিবাহ বন্ধ হবে কি?”
ফেসবুকে দেয়া সানুখই এর পোস্টটি টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের ব্যবস্থাপক জানে আলম দৃষ্টিগোচর হলে তিনি রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। বিষয়টি ইউএনও এবং থানার ওসিকে জানানো হয়। তখন সাথে সাথে ইউপি সদস্য ওই বাড়িতে ছুঁটে যান এবং অভিভাবকদের বুঝিয়ে বিয়েটি স্থগিত করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজস্থলীর ইউএনও মো. শেখ ছাদেক জানান, ‘পাড়াকর্মীর মাধ্যমে খবর পাওয়ার সাথে সাথে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে বিষয়টি দেখতে বলি। কিশোরী প্রাপ্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে স্থগিত রাখা রয়েছে বলে অভিভাবকরা সম্মত হয়েছে বলে জেনেছি।’