দীঘিনালা প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় প্রকাশ্যে বুলডোজার দিয়ে চলছে পাহাড় কাটা। ঘটনাটি উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের দক্ষিন হাজাছড়া এলাকায়। অবশ্য প্রশাসন খবর পেয়ে বিকালে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করেছেন।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকদিন ধরেই বুলডোজার দিয়ে পাহাড় কাটা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পাহাড়টির অনেক অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। পাহাড় কাটতে গিয়ে বড় বড় বেশ কয়েকটি গাছও কাটা হয়েছে। কর্তনকৃত পাহাড়ের মাটি নেওয়া হচ্ছে ৩টি ট্রলি ও ২টি ড্রাম ট্রাক দিয়ে। পাহাড়টি কাটার ফলে পাহাড়ের উপরের একটি বসতবাড়ি মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। সে বাড়ির মালিক মঞ্জুরুল আলম (৪৫) জানান, তার প্রতিবেশী নিজ অংশের পাহাড়টি কাটার ফলে তার বসতবাড়ি ঝুঁকিতে পড়েছে এবং তার যাতায়াতের অসুবিধা হচ্ছে। তিনি বাধা দিলেও কোন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষন (সংশোধন) আইন- ২০১০-এর ৪ ধারার ৬ (খ) এ বলা আছে, ‘কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কতৃক সরকারী বা আধা সরকারী বা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন ও/বা মোচন করা যাইবেনা।’
পাহাড়ের মালিক ইসমাইল হোসেন (২৮) জানান, পাহাড়ের মাটি স্থানীয় একটি সেতুতে নেয়া হচ্ছে এবং বিষয়টি অনেকেই জানেন তাই কোন সমস্যা হচ্ছেনা। ইসমাইল হোসেন আরও জানান, মূলত পাহাড়টি কাটাচ্ছেন ছোটমেরুং এলাকার স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা জহির হোসেন।
অপরদিকে বিষয়টি সম্পূর্ন অস্বীকার করে জহির জানান, এ পাহাড় কাটার সাথে তিনি সম্পৃক্ত না। মেরুং বাজারের পাশে মাইনী নদীতে সেতু নির্মাণ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেলিম এন্ড ট্রেডার্স। সেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাহাড় কেটে সেতুর পার ভরাট করছে বলে তিনি জানেন।
সেতুর কাজ দেখভালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করছেন প্রকৌশলী মো. জিহাদ। পাহাড় কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে জিহাদ জানান, তিনি শুধু সেতুর কাজের দায়িত্ব পালন করছেন; এর বেশি কিছু জানেননা।
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা মুস্তফা জানান, সংবাদ পেয়ে বিকালে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে পাহাড় কাটার সত্যতা পেয়েছেন। ঘটনাস্থলে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে পাহাড় কাটার অপরাধে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পাহাড় কাটার সঙ্গে সম্পৃক্তরা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে জরিমানার টাকা জমা দেওয়ার কথা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।