সবখানে ঈদের আমেজ। পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি কাটাতে এবং পাহাড়াঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এই সময়ে মুখর হতে শুরু করে পর্যটন শহর খাগড়াছড়ি।
অন্য দুই পার্বত্য জেলার মতো এখানেও দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসত ভ্রমণ করতে। কিন্তু এবার চিত্র ভিন্ন। পাহাড়ধসের কারণে পর্যটন ব্যবসায়ও ধস নেমে এসেছে। আগাম বুকিং না থাকায় হোটেল ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। দুশ্চিন্তা পরিবহন মালিক শ্রমিকদের মধ্যেও।
ঈদ এলেও পর্যটকদের আনাগোনা নেই। সম্প্রতি রাঙামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলায় প্রবল বর্ষণে পাহাড় ধসে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। এতে রাঙামাটির পর্যটন স্পটগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ বিপর্যস্ত। অন্যদিকে খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধসে চারজন নিহত হলেও পর্যটন স্পটগুলো অক্ষত রয়েছে। তবু ভীতি ও আতঙ্কের কারণে এখানে পর্যটক আসছে না। কারণ, পর্যটকদের কাছে পৌঁছেছে নেতিবাচক ধারণা। হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, আগের মতো এই ঈদে আগাম বুকিং নেই বললেই চলে। উল্টো অনেকে বুকিং বাতিল করেছে।
গাইরিং হোটেলের মালিক এস অনন্ত জানান, অন্য দুই পাহাড়ি জেলার মতো খাগড়াছড়িতে ধসে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। জেলার প্রতিটি পর্যটন স্পট সম্পূর্ণ অক্ষত রয়েছে। এমনকি রাঙামাটির সাজেক ভ্যালিরও কোনো সমস্যা হয়নি।
পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপক ইদ্রিস তালুকদার বলেন, ‘পাহাড়ধসের ভীতির কারণে এবার ঈদে পর্যটক আসছেন না। অথচ জেলায় পাহাড়ধসে উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষতি হয়নি। আমরা পর্যটকদের অভয় দিয়ে খাগড়াছড়িতে বেড়াতে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। ’
ঈদ উপলক্ষে জেলা শহরের অদূরে আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র, রহস্যময় গুহা, রিছাংঝরনা, ঝুলন্ত সেতুসহ যেসব পর্যটন স্পটগুলো ঈদের এ সময়ে থাকার কথা জমজমাট, সেগুলোতে এখন হাহাকার। দীঘিনালার দুর্গম তৈদুছড়া, শুকনাছড়ি ঝরনায় পর্যটকদের দেখা নেই। হালসময়ে পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে রাঙামাটির সাজেক উপত্যকার হোটেল-মোটেলগুলোতে বুকিং নেই বললেই চলে। প্রকৃত অর্থে কোথাও পর্যটকের দেখা নেই। এসব পর্যটন স্পটে যাওয়ার জন্যে চাঁদের গাড়ি, পিকআপসহ অন্য পরিবহনগুলোই ভরসা। অথচ ঈদ মৌসুমে পর্যটক না থাকায় সেই পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে চরম দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।
এদিকে পর্যটকদের সুবিধাসহ নিরাপত্তায় প্রশাসন বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। পুলিশ আশা করছে, ধীরে ধীরে ঠিকই পর্যটক আসবে এখানে। খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আহমদ খান বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ’