স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ঘোষণা করেছে বিএনপি। সেই হিসেবে রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন দিতে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক এবং পৌর কমিটির সভাপতি,সাধারন সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক, এই পাঁচজনের যৌথ সিদ্ধান্তে প্রার্থী নির্বাচন করে কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশনা জানিয়ে দিয়েছে দলটি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি হাজী মোঃ শাহ আলম জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা আমরা জেনেছি,সেই মোতাবেক পরবর্তী স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রতিটি এলাকাতেই এইভাবেই প্রার্থী বাছাই করা হবে। রাঙামাটি পৌরসভাতেও মেয়র পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে এই নিয়মেই।’
তবে প্রার্থীরাও বিষয়টিকে নিয়ে ভাবছেন নানাভাবেই। সাবেক পৌর মেয়র এবং সর্বশেষ নির্বাচনে প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ভূট্টো,এবারো মেয়র পদে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন- এটা একটা ভালো সিদ্ধান্ত যে নির্বাচনে বেশ আগেই এটা জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ পৌরসভার দুই নির্বাচনের ফলাফল বিবেচনায় নিলে এবং আওয়ামীলীগের প্রার্থীর সাথে সত্যিকারের প্রতিদ্বন্ধিতা গড়ে তুলতে পারার যোগ্যতা মাথায় রাখলে আমি আশাবাদি যে,এই পাঁচজন আমার ব্যাপারেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন এবং কেন্দ্রও আমাকেই মনোনয়ন দেবেন বলে আমি আশা করছি।’
আরেক মেয়র প্রার্থী জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন বলেন-‘ কেন্দ্র যেটা ভালো মনে করেছে সেটাই করেছে এবং আমি কেন্দ্রীয় এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। আমরা বিশ^াস দল আমাকেই মনোনয়ন দিবে।’
পৌর বিএনপির সভাপতি ও মেয়র প্রার্থী শফিউল আজম বলেন-‘ বল তো এখন আমার কোর্টে। কারণ যে পাঁচ জন মনোনয়ন চূড়ান্ত করবেন,তার মধ্যে ৩ জনই আমার পৌর কমিটির এবং প্রার্থী হিসেবে যারা আলোচনায় আছেন,তাদের মধ্যে কেবলমাত্র আমিই নিজেই নিজেকে প্রার্থীতা বাছাইয়ে ভোট দেয়ার সুযোগ আছে। সেই সাথে পৌর নির্বাচনে পৌর কমিটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বিবেচনায় নিলে আমিই মনোনয়ন পাব বলে আশাবাদী।’
মেয়র প্রার্থী জেলা যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম শাকিল বলেন, যে পাঁচজনকে মেয়র মনোনয়নের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে তারা প্রত্যেকেই আমার শ্রদ্ধাভাজন এবং দায়িত্বশীল নেতা। তারা আমার অবদান ও দলে ভূমিকা সম্পর্কেও জানেন। কর্মীদের সাথে আমি সারাক্ষন মাঠেঘাটে থাকি এটা সম্পর্কেও তারা অবগত আছেন,তাই আমার আস্থা আছে তাদের প্রত্যেকের প্রতিই। আমি আশাবাদী যে, আমিই বিএনপির মনোনয়ন পাব মেয়র পদে।’
তবে চার সম্ভাব্য প্রার্থীই নিজেদের আশাবাদের কথা জানালেও মুখ খুলছেন না নীতি নির্ধারক পাঁচ শীর্ষ বিএনপি নেতা। নিজেদের গুরুত্ব অনুধাবণ করে কৌশলী অবস্থান নেয়া এই নেতারা চারজনকেই আশ^স্থ করছেন,পরামর্শ দিচ্ছেন মাঠে কাজ করে যেতে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এখন আর মাঠের কাজ নয়, এই পাঁচ নেতার হাতেই সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারিত হবে।
সঙ্গত কারণেই প্রশ্নও আছে অনেক। এই নেতারা কি নিরপেক্ষ থাকতে পারবেন দলের স্বার্থে ? নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জয়ের সম্ভাবনা আছে এমন প্রার্থীকেই মনোনয়ন দিবেন তারা নাকি নিজেদের অন্ত:কোন্দলের তুষের আগুনের প্রভাব পড়বে এখানেও ?
সব শংকাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি হাজী মোঃ শাহ আলম বলেছেন, ‘ রাঙামাটি জেলা বিএনপি অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে সবচে বেশি ঐক্যবদ্ধ এবং সুসংহত। গতবার ভোট কারচুপির কারণে আমরা মেয়র পদটি হারিয়েছি,এবার সেটা পুনরুদ্ধার করতে চাই। যদি নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হয়,তবে এবার আমাদের প্রার্থীই বিজয়ী হবে।’ ‘প্রার্থী মনোনয়নে সব কিছুই মাথায় রাখা হবে’ বলে মনে করিয়ে দিয়েছেন জেলা বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।