সৈকত বাবু ॥
রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার ইসলামপুরে সরকারবিরোধী নাশকতার অভিযোগে যুদ্ধাপরাধীর দায়ে বিতর্কিত সংগঠন জামায়াত ইসলামির নেতাসহ চারজনকে আটক করে স্থানীয়রা। স্থানীয়রা পুলিশের কাছে দুজনকে সোপর্দ করার পর শনিবার সকালে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে ইসলামপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও গুলসাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লুৎফুর রহমান সেলিমের বাসায় গোপন বৈঠকে বসেন জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও রাঙামাটি পৌর জামায়াতের সাবেক আমির মোহাম্মদ মনসুরুল হক। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন নানিয়ারচর উপজেলার ইসলামপুর দাখিল মাদরাসার অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক ইসমাইল হোসেন সিরাজী ও আব্দুল কায়ুম হোসাইন নামের আরও একজন। বৈঠকে স্থানীয় আরও ৮/১০ উপস্থিত ছিলেন। পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পূর্বের দিনে এই গোপন বৈঠক ও জামায়াতকে সংঘটিত করে নাশকতার করা হচ্ছে- এমন অভিযোগে তাদের আটক করে স্থানীয়রা। এসময় অভিযুক্ত এক জামায়াত নেতার থেকে ১২/১৫ পৃষ্ঠার একটি বই উদ্ধার করা হয়। সেখানে জামায়াতের সদস্য সংগ্রহসহ সাংগঠনিক বিষয়াদি উল্লেখ রয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস।
এদিকে নানিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মামুন ভূঁইয়া জানান, ইসলামপুর থেকে শুক্রবার বিকালে নাশকতার উদ্দেশে জামায়াতের গোপন বৈঠক চলে। এসময় স্থানীয়রা তাদের আটক পুলিশে সোপর্দ করে। শুনেছি শনিবার সকালে তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র কিংবা নাশকতার শঙ্কা থাকলেই তো জড়িতদের আটক করা যায়। নাশকতার করার আগে তো কোন আলামত নাও থাকতে পারে। নাশকতা করার পর তাদের গ্রেফতার করেও লাভ কী? দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের আইনের আওতায় না এনে এভাবে ছেড়ে দেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক।
নানিয়ারচর থানার ওসি সুজন হালদার বলেন, উপজেলার ইসলামপুর এলাকাবাসী শুক্রবার বিকেলে নাশকতার অভিযোগে জামায়াত নেতাসহ চারজন আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পরে আমরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে স্থানীয় দুজনকে ছাড়া জেলা থেকে আসাদের বিষয়ে তদন্ত করি। আমরা নাশকতার কোন আলামত পাই নাই। বিষয়টি সম্পর্কে ইউএনও স্যারও অবগত আছেন। একজন আইনজীবীর জিম্মায় আটক দুজনকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ওই আইনজীবীর নাম জানাননি ওসি।
নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফজলুর রহমান জানান, আমি ওসি সাহেবকে বলেছি, আটকদের বিরুদ্ধে যদি নাশকতার কোন আলামত থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য। এ ব্যাপারে আর কোন আলাপ হয়নি।