রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট শক্তিমান চাকমাকে (৫২) গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া এগারোটায় নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের পাশেই অবস্থিত বাসা থেকে নিজ কার্যালয়ে যাওয়ার সময় দুইজন অস্ত্রধারি দুর্বৃত্ত তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির আরেক শীর্ষ নেতা সুদর্শন চাকমা। হত্যাকান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটির পুলিশ সুপার আলমগীর কবিরও। এই সময় তার সাথে থাকা রূপম চাকমা (৩৫) নামের আরো একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
এডভোকেট শক্তিমান চাকমা ২০১০ সালে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি থেকে বের হয়ে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(এম এন লারমা) নামে যে নতুন রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে তার অন্যতম উদ্যোক্তা ও শীর্ষ নেতা। তিনি সর্বশেষ সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। শক্তিমান চাকমার সাথে থাকা আহত রূপম চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএনলারমা)র নানিয়ারচর উপজেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন,সকালে উপজেলা কার্যালয়ের সামনে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে জেনেছি। তাৎক্ষনিকভাবে কারা এই হত্যাকান্ডের জন্য দায়ি বলা যাচ্ছেনা। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাঙামাটিতে আনা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএনলারমা)’র কেন্দ্রীয় কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও বাঘাইছড়ি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সুদর্শন চাকমা বলেছেন, সকালে উপজেলা চত্বরের নিজ বাসা থেকে মোটর সাইকেলে রূপম চাকমা সহ নিজের কার্যালয়ে যাওয়ার পথে একশত গজের মধ্যে দুইজন অস্ত্রধারি মোটর সাইকেল থামিয়ে রূপম চাকমা ও শক্তিমান দাদাকে গুলি করে। দাদার শরীরে তিনটি গুলি লাগে এবং তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান বলে জেনেছি। রূপম চাকমা জীবিত আছে,তবে সেও গুলিবিদ্ধ এবং তার অবস্থাও আশংকাজনক।
তিনি এই হত্যাকান্ডের ঘটনার জন্য ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ( ইউডিপিডিএফ) কে দায়ি করে বলেছেন,এটি ইউপিডিএফ এর কাজ। কারণ তারা দীর্ঘদিন ধরেই তাকে হত্যা করার হুমকি দিয়ে আসছিলো। এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে কর্মসূচী দেয়া হবে বলেও জানান সংগঠনটির অন্যতম শীর্ষ ও দায়িত্বশীল এই নেতা।
এদিকে হত্যাকান্ডের অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপিডিএফ এর প্রচার বিভাগের প্রধান নিরন চাকমা বলেছেন, এটি তাদের অন্ত:কোন্দলের ফলে হতে পারে। আমরা কোথা থেকে এর মধ্যে আসবো। আমার ধারণা তাদের নিজেদের বিরোধ কিংবা যারা আমাদের মধ্যে বিরোধ জিইয়ে রাখতে চায়,এমন তৃতীয় পক্ষই এই কাজটি করেছে।’
4 Comments
তিব্র ক্ষোব ও নিন্দা জানাই,,তদন্ত পুর্বক ব্যাবস্থা নিতে হবে,,,
বুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ উপদেশে প্রাণী বানিজ্য(প্রাণীকে হত্যা করা লাগে বিধায়), বিষ বাণিজ্য বা মাদক বাণিজ্য (যা দ্বারা চেতনা নাশ হয়) ও অস্ত্র বাণিজ্য (এক মুহূর্ত প্রাণে হরণ করা যায়) নিষেধ ছিল। অথচ এই ৩টি দ্বারা পাহাড়িরা আক্রান্ত। এই ৩টি বাণিজ্যই জাতিকে ধ্বংস করছে। ১৯৭৬ সালে এই উপজেলার গর্জন তলি গ্রাম থেকে আমার বড় ৫ ভাই, মা-বাবাসহ ৭ জনকে রাতের আঁধারে ধরে নিয়ে নির্মম নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছিল। মানুষ হত্যা করা জগন্য পাপ। এই পাপে ভারাক্রান্ত জাতি কী দীর্ঘদিন টিকে থাকতে পারবে? নারী জাতির উপর হাত তোলা আরো জগন্যতম পাপ। আমার মা স্নেহ মুখী চাকমা ১৯৪৭এর দেশ বিভাগকালীন সময়ের কিংবদন্তী স্নেহ কুমার চাকমার ছোট বোন অত্যন্ত ধার্মিক ও দয়ালু ছিলেন। বাবা তৎকালীন ভারতে চলে যাওয়া গোপাল ভূষণ চাকমা (পরে ভারতের পুলিশ কর্মকর্তা হন, বর্তমান চাকমা রাজার ১ম স্ত্রীর দিকে মামা শ্বশুর) ‘র জ্যাঠাতো ভাই ছিলেন। আমার আপন কাকা ২ জন, আপন মামা ২ জন, বাবার ২ চাচার ছেলে মেয়ে, বাবার মামাতো বোন আগরতলাসহ ত্রিপুরার অন্যান্য জায়গায় ছিল বিধায় বাবা সেখানে ঘন ঘন যেতেন। এটাই নাকি ছিল আমার বাবার দোষ।
তীব্র নিন্দা জানাই ও দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই।
এক জন মানুষকে খুন করা মানে পুরো মানব জাতিকে খুন করা! রাজনীতির ভাষা কি শুধুই গুম আর খুন????নেতা সেই যে দলেরই হোক দেশের জন্য পুরো মানব জাতির জন্য তিলে তিলে গড়া বহু দিনের সম্পদ! একজন নেতা গড়ে তোলা দীর্ঘ সাধনা আর চড়াই উতড়াই পাড়ি দিয়ে এতটুকু আসার ফল! এই সংস্কৃতি যতক্ষন পর্যন্ত বর্তমান সভ্য রাজনৈতিকরা মাথা থেকে দূর করতে পারবেন না ততক্ষন দেশে তথা পুরো বিশ্ব নেতা শূন্য হতে থাকবে!!