রাঙামাটির নানিয়ারচরে অস্ত্রের মুখে ২৫ জন গ্রামবাসীকে অপহরণের অভিযোগ তুলেছে প্রসীত বিকাশ খীসা নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। রোববার দুপুরে সংগঠনটির রাঙামাটি জেলা ইউনিটের সংগঠক সচল চাকমা গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ করেন।
বিবৃতিতে এ ঘটনায় তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস-এমএন লারমা) ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) দলকে দায়ী করেছেন। একই সাথে অপহরণের ঘটনায় তিনি অবিলম্বে অপহৃত গ্রামবাসীদের উদ্ধার এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে সচল চাকমা অভিযোগ করেন, ‘ রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ইঞ্জিন-চালিত বোট যোগে কাঁচামালসহ বিভিন্ন গ্রামের লোকজন কুতুকছড়ি বাজারে যাওয়ার সময় সংস্কারবাদী (জেএসএস-এমএন লারমা) ও নব্য মুখোশদের (ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক) সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হাতিমারা দোরের একটি টিলায় তাদেরকে আটকায়। এরপর তারা আটকানো সমস্ত বোট থেকে আনুমানিক ২৫ জন মুরুব্বীকে বাছাই করে ‘অস্ত্রের মুখে’ অপহরণ করে গোপন স্থানে নিয়ে যায়। এ অপহরণ ঘটনায় নেতৃত্ব দেয় ‘নব্য মুখোশ বাহিনী’র অন্যতম সর্দার প্রত্যয় চাকমা ওরফে দাজ্যা ও পা-ব চাকমা ওরফে রনয়।’
সচল চাকমা উল্লেখ করেন, ‘তারা দুইজনই হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দুই নেত্রী মন্টি চাকমা ও দয়া সোনা চাকমার অপহরণ এবং ইউপিডিএফের একাধিক সদস্যকে খুনের সাথে জড়িত আসামি।’ বিবৃতিতে সচল চাকমা অপহরণের ঘটনাকে আগামী ২৫ জুলাই নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে অন্যায় প্রভাব খাটানোর অপচেষ্টা বলে আখ্যায়িত করেছেন।
বিবৃতিতে অপহৃত অভিযোগে ১১ জনের নাম পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন- চন্দিলাল চাকমা (৩২), সোনমনিচাকমা (৩৮), বায়ুধন চাকমা ওরফে বায়ক্ক (৫২), রাতুমনি চাকমা (৪৫), শ্যামল কান্তি চাকমা (৪৫), প্রত্যে মোহন চাকমা (৫৫), সুইধনচাকমা (৩০), নবরতনচাকমা (৪৫), লদ্রু সেনচাকমা (৫০), দেব রঞ্জনখীসা (৫০), সুনীলকান্তিচাকমা (৫০)।
তবে এ বিষয়ে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা বলেন, ‘অপহরণের বিষয়ে আমি এখনো কিছুই জানিনা।’
ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) দলের দফতর সম্পাদক মিটন চাকমা বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক পরীধি এখন সীমিত আকারে হয়ে গেছে। আমাদের পক্ষে এ ধরণের কাজ করার অবস্থা নেই। তবে আমরা এধরণের কোনও কাজের সাথে জড়িত নই।’
নানিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল লতিফ জানিয়েছেন, ‘এ ধরণের কোনও খবর আমরা পাইনি। খবর পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।’