ধলিয়া খালে সেতু চায় এলাকাবাসী

খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলা সদরের সঙ্গে সবচে কাছের জনবসতিপূর্ণ এলাকা মোহাম্মদপুরের মধ্যবর্তী ধলিয়া খালে একটি সেতু চায় এলাকাবাসী।
জানা গেছে, উপজেলার পার্শ্ববর্তী মোহাম্মদপুর, বড়ঝলাসহ পাঁচ গ্রামের ছয় সহ¯্রাধিক বাসিন্দার উপজেলা সদরে যাতায়াত, হাটবাজার, চিকিৎসা এবং স্কুল-কলেজে আসা-যাওয়ায় মাটিরাঙ্গা হাসপাতাল সড়কই একমাত্র ভরসা। সড়কের ধলিয়া খালের ওপর কোনো সেতু না থাকায় ওই এলাকার লোকজন শুকনো মৌসুমে হেঁটে খাল পার হলেও বর্ষাকালে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়। ওই এলাকায় কোনো বাজার বা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। ফলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বর্ষাকালে খাল পার হয়ে নিয়মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া সম্ভব হয় না।
মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা মো. খলিলুর রহমান আক্ষেপ করে বলেন, ‘ধলিয়া খালের পূর্বপাশে কোনো জনমানব বসবাস করেন বলে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা কেউ মনে করেন না! কোনো জনপ্রতিনিধি এসে খোঁজ-খবর নিতে আমরা দেখি না। খালের উপর সেতু না থাকায় কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বর্ষাকালে নষ্ট হয়। এ কারণে কৃষিজ পণ্য উৎপাদনকারীরা উৎসাহ হারাচ্ছেন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা বর্ষায় স্কুল-কলেজে যেতে পারে না।’
বড়ঝলা গ্রামের বাসিন্দা মো. আবদুল আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রবল বর্ষায় আমরা খাল পাড়ি দিয়ে বাজারে যেতে পারি না বলে কাজের অভাবে বেকার থাকি। পরিবার নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাতে হয়।’
মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আবুল হাসেম ভূঁইয়া ওই এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে সম্প্রতি নিজ খরচে মোহাম্মদপুর, বড়ঝলাসহ পাঁচ গ্রামবাসীর সহযোগিতায় ধলিয়া খালের উপর লোহার রড দিয়ে একটি ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করে দেন। কিন্তু সাম্প্রতিক টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে এটি যেকোনো মুহূর্তে পানির ¯্রােতে তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁর।
মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. শামছুল হক বলেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে একটি সাঁকো করে দিয়েছি। এক বছর আগে সেখানে সেনাজোনের পক্ষ থেকেও ঝুলন্ত সেতু করে দেওয়া হয়েছিল। গেল বর্ষায় সেটি ভেসে যায়। এর পর কাউন্সিলর মো. আবুল হাসেম ভূঁইয়া খালের উপর লোহার রড দিয়ে আরেকটি ঝুলন্ত সেতু করে দিয়েছেন।’
মেয়র বলেন, ‘বর্ষাকালে পানির স্রোতে সাঁকো বা সেতু রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে বিধায় এখানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প জমা দিয়েছি। সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে সেতু নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পেলে চলতি অর্থ-বছরে সেতুটি নির্মাণ করা সম্ভব হবে।’