খাগড়াছড়িলিড

দীঘিনালায় রাবার বাগানের গাছ কেটে লাকড়ি হিসেবে বিক্রি!

জাকির হোসেন, দীঘিনালা ॥
জেলার দীঘিনালায় সরকারি রাবার বাগান উজাড়ের যেন মহোৎসব চলছে। প্রতিদিন প্রকাশ্যে বাগানের পর বাগান কেটে লাকড়ি হিসেবে বিক্রয় করলেও কর্তৃপক্ষ যেন কিছুই দেখছে না। এছাড়া রাবার বাগান কেটে গাছ বিক্রয়ের পর ব্যক্তিগতভাবে ফলজ ও সেগুন বাগান করে বেদখল করা হচ্ছে সেসব পাহাড়। রাবার চাষীদের দলপতির পক্ষ থেকে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও অদৃশ্য কারণে প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণ না করার অভিযোগ উঠেছে। এতে করে ধ্বংস হচ্ছে সাদাসোনা খ্যাত রাবার কসের পরিপক্ক বাগান। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

বুধবার উপজেলার বোয়ালখালি ইউনিয়নের ২নং ও ৩নং যৌথখামার রাবার প্রকল্প এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বেশ কয়েক জায়গায় শ্রমিকরা দলবদ্ধ হয়ে বিশাল বিশাল বাগান কেটে লাকড়ি হিসেবে স্তুপ করছেন। দেদারছে কাটা হচ্ছে বাগানের পর বাগান। আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন এলাকা, বুদ্ধপাড়া এলাকা, আলমগীরটিলা এলাকা এবং কড়ইতলি এলাকায় একযোগে বাগান কাটার যেন উৎসব চলছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কোটি টাকা ব্যয়ে সৃজিত সরকারি রাবার বাগানের গাছ বিক্রয়ে একরকম প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয়, গাছ কেটে বিক্রয়ের পর রাবার বাগানের সেই পাহাড়ে বিভিন্ন ব্যক্তিগতভাবে ফলজ ও সেগুন বাগান করে বেদখল করা হচ্ছে শতাধিক একর জায়গা।

অবশ্য শ্রমিকদের কাছে জানতে চাইলে অনেকের উত্তর একটাই, মালিকের নাম জানে না তারা; শুধু দৈনিক হাজিরায় টাকার বিনিময়ে কাজ করছেন। কড়ইতলি এলাকায় শ্রমিক সোহেল চাকমা (২৫) জানান, ছাতকছড়া এলাকা থেকে কাজ করতে এসেছেন তিনি; কিন্তু মালিকের নাম জানেন না।

২নং যৌথখামার রাবার প্রকল্পের সহকারী দলপতি নিকেল ত্রিপুরা (৩৮) ওরফে বাগানসা বলেন, ‘রাবার বাগান উন্নয়ন প্রকল্পের দেখভালের দায়িত্বে থাকা দীঘিনালা কার্যালয়ের মো. আলম এবং জেলা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. জসিম উদ্দিনকে গত সপ্তাহে বিষয়টি জানিয়েছি। থানাকে অবহিত করে পুলিশ পাঠিয়ে কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু অদৃশ্য কারণে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না আর এদিকে প্রতিদিন প্রকাশ্যে বাগান কাটা চলছে তার কারণ বুঝতে পারছি না।’

জানতে চাইলে দীঘিনালা কার্যালয়ের মো. আলম জানান, বিষয়টি তারা জেনেছেন কিন্তু তিনি এলাকার বাইরে থাকায় ব্যবস্থা নিতে পারেননি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড খাগড়াছড়ি জেলা কার্যালয়ের সুপারেনডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন জানান, তিনি ছুটিতে খাগড়াছড়ির বাইরে আছেন; খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 4 =

Back to top button