দীঘিনালা প্রতিনিধি ॥
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় পিতার বিরুদ্ধে সন্তানদের নির্যাতন এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করেছে চার মেয়ে। মাতৃহারা চারবোনের ভাই নেই, বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর দুই ভাইয়ের জন্ম। চার বোনের অভিযোগ, মা মারা গেলে বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর তাদের ওপর শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন; এমনকি তাদের বিরুদ্ধে দেয়া হয় মিথ্যা ডাকাতির মামলা।
ঘটনাটি উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের চোংড়াছড়ি এলাকার। বুধবার দুপুরে বোয়ালখালি নতুনবাজার সংলগ্ন হোটেল ইউনিটির হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করে সোহরাব হোসেন সওদাগরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তার চার মেয়ে মারুফা আক্তার (২৬), খাদিজা আক্তার (২৪), জেসমিন আক্তার (২২) এবং সুমাইয়া আক্তার (২০)। তারা জানান, মারুফা আক্তার বিবাহিত এবং বাকি তিন বোন আবিবাহিত। যদিও সোহরাব হোসেন যথেষ্ট সম্পদের মালিক তবুও তাদের ঠাই হয়নি বাবার বাড়িতে। সকলেই বড়বোন মারুফা আক্তারের আশ্রয়ে থেকে কষ্ট করে পড়ালেখা করছেন। খাদিজা অনার্স শেষ করেছেন, জেসমিন ডিগ্রি শেষ করেছেন এবং সুমাইয়া ইন্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছেন।
অভিযোগে তারা জানান, জেসমিনকে তার বাবা রড দিয়ে মেরে হাত ভেঙ্গেছেন সেটি এখনও সারেনি। সম্প্রতি একটি ঘর তোলা নিয়ে বড়বোনের স্বামী ফজলুল করিমসহ সকলকে মারধর করেন সোহরাব। হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর বিষয়টি নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে।
এর আগে সোহরাব বাদি হয়ে আদালতে একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করে। সেটিতে মোট ৫জনকে আসামি করা হয়। প্রধান আসামি জামাতা ফজলুল করিম আর বাকি চার আসামি হলেন সোহরাবের চার মেয়ে। সংবাদ সম্মেলনে খাদিজা এবং জেসমিন জানান, কলেজে পরীক্ষা শেষ করেই বাবার দেয়া মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যেতে হয়েছে তাদের।
এক প্রশ্নের জবাবে খাদিজা জানান, পারিবারিক এসব বিষয় নিয়ে সমাধানের জন্য এলাকার স্থানীয়রা অনেকবার সালিশ বৈঠক করেছেন। কিন্তু সোহরাব সিদ্ধান্ত মেনে না নেওয়ায় কোন সুরাহা হয়নি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে খাদিজা, জেসমিন ও সুমাইয়া, তাদের পড়ালেখার খরচ এবং ভবিষ্যত জীবন যাপনে সন্তানের অধিকার পেতে প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সোহরাব হোসেন (৬৬) বলেন ‘চার মেয়ে নিজেদের মত করে সবকিছু করে, তারা কেউ আমার কথা মানেনা। আর আমার সম্পদ আমি মারা গেলে তারাইতো পাবে, কিন্ত আমি বেঁচে থাকতে তো তাদেরকে সম্পদ দিতে পারি না।’