আবু দাউদ, খাগড়াছড়ি
কোন ক্রমেই থামানো যাচ্ছে না খাগড়াছড়ির মাটিখেকোদের। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, পাহাড় কাটা এবং জমির টপ সয়েল (মাটির উপরিভাগ) কাটা চলছেই। এই চক্রের প্রধান হোতা হিসেবে পরিচিত ঠিকাদার মো. সেলিম। তাকে দমাতে প্রশাসনের নানা ধরণের কঠোরতাও কাজে আসছে না। পাহাড়, টপ সয়েল কাটার দায়ে অতি সম্প্রতি দু’দফায় তাকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, অভাবি ও দরিদ্র জমি মালিকদের টাকার প্রলোভন ও পুকুর খনন করে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ঠিকাদার মো. সেলিম পাহাড় ও কৃষি জমির মাটি কেটে নিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় তার নামে কেনা নিচু জমি চেঙ্গী নদীর বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। এসব মাটি মূলতঃ তার ইটভাটায় ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদার সেলিম ছাড়াও ইটভাটার কয়েকজন মালিক অবৈধভাবে মাটি কাটেন।
খাগড়াছড়ি পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী জানান, ‘ঠিকাদার সেলিমসহ চিহ্নিত কিছু লোক পাহাড়কাটা, অবৈধ বালু উত্তোলন, টপ সয়েল কাটার ক্ষেত্রে অদম্য হয়ে উঠেছেন। এ কারণে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঝে মাঝে দণ্ড দিলেও তাদের লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হচ্ছে না।’
সবশেষ শনিবার খাগড়াছড়িতে কৃষি জমির টপ সয়েল কাটায় সেলিম এন্ড ব্রাদাস’কে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। জেলা সদরের ঠাকুরছড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে দণ্ড দিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা মতিন। এর আগেও ২১ জানুয়ারি একই অভিযোগে আড়াই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাহফুজা মতিন জানান, ‘অবৈধভাবে টপসয়েল কাটায় ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ অনুযায়ী ভাটা মালিক মো. সেলিমকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।’
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘মাটি, বালু ও পাহাড় খোকোদের রেহাই নেই। অভিযোগ পেলেই তাৎক্ষনিকভাবে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’