বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম তুমব্রু সীমান্তে নোম্যান্স ল্যান্ডের তুমব্রু খালের ওপরে পিলার ‘নির্মাণ’ করেছে মিয়ানমার। এ ঘটনায় সোমবার সকালে বিজিবির কক্সবাজারের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এস এম বায়েজিদ খানের নেতৃত্বে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বিজিবি ও স্থানীয়রা জানায়, জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে তুমব্রু বাজারের পাশ্ববর্তী নো-ম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় তুমব্রু খালের ওপরে পিলারসহ পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি। গত কয়েকদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে সীমান্তে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তবে স্থাপনাটি সেতু নাকি বাঁধ এটি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে রয়েছে ধু¤্রজাল।
এদিকে এ ঘটনায় সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ডে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের মধ্যেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। খবরটি ছড়িয়ে পড়ায় কক্সবাজারের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এস এম বায়েজিদ খানের নেতৃত্বে বিজিবির কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কক্সবাজার সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল এস এম বায়েজিদ খান জানান, ‘সীমান্তের তুমব্রু খালের ওপরে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ কাঁটাতারের বেড়া সংস্কার করছে। খালের ওপর আগে কাঠের খুঁটি ছিল, সেটি পানিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেখানে আরসিসি পাকা পিলার দেয়া হচ্ছে। এটি কোনো সেতু কিংবা বাঁধ নয়। তবে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে কেন তারা এটি নির্মাণ করছে, তা জানতে চেয়ে সোমবার মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপিকে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। তাদের কাছ থেকে চিঠির জবাব পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তবে সীমান্তে সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’
ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আবদুর রহিম, মোহাম্মদ ফরিদসহ স্থানীয়রা জানান, ‘গত কয়েকদিন থেকেই খালের পাশে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি পিলারের মত পাকা স্থাপনা ও কুটি তৈরির কাজ করছিল। এটির কারণে বর্ষা মৌসুমে পানিতে বাংলাদেশে তুমব্রু বাজার এবং শূণ্যরেখায় আশ্রয় নেয়া কোনাপাড়া রোহিঙ্গা আশ্রয় ক্যাম্পটি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা বেড়েছে। তবে এটি সেতু নাকি বাঁধ তা সঠিক করে বলতে পারছিনা।’
অপরদিকে সীমান্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের দাবি, কাটাতাঁরের বেড়ার ওপাশে নো-ম্যান্স ল্যান্ডের পাশ্ববর্তী তুমব্রু সীমান্তে আবারও সেনা টহলের সংখ্যা বাড়িয়েছে মিয়ানমার। গতমাসে বান্দরবান সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের আরাকান ও চিনরাজ্যে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। গোলযোগের কারণে রাখাইন রাজ্যের বুথিডং, রাথিডং ও মংডুসহ বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন ও রোহিঙ্গারা আতঙ্কে নিরাপদ জায়গায় সরে যাচ্ছে।
বিজিবি জানায়, সীমান্ত অঞ্চলে সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধে বান্দরবানের রুমা, থানছি, আলীকদম, রোয়াংছড়ি ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তঞ্চলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।