
খাগড়াছড়ি জেলা সদরের বলপাইয়া আদামে এক পাহাড়ি বাড়িতে ডাকাতি ও গণধর্ষন ঘটনার নেপথ্য উদঘাটন করতে শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনায় অংশ নেয়া ৯জনই পেশাদার ডাকাত। ডাকাতি ও ধর্ষন; দুটি তাদের উদ্দেশ্যে ছিল। আসামীদের প্রত্যেকের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। প্রধান আসামী জেলার রামগড়ের তৈচালা গ্রামের মৃত আবুল কাশেম এর ছেলে মো: আমিন এর পরিকল্পনায় পুরো ঘটনা সংগঠিত হয়। চাঞ্চল্যকর ঘটনা নিয়ে রবিবার সকালে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার মো: আব্দুল আজিজ। সংবাদ সম্মেলনে আরো ব্রিফিং করেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আব্দুল আজিজ জানান, ঘটনায় অংশ নেয়া ডাকাত সদস্যরা মূলত: জেলে থাকা অবস্থায় নিজেদের মধ্যে পরিচয় ঘটে। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তারা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সিএনজিযোগে খাগড়াছড়িতে পৌঁছায়। ডাকাতিকালে আসামীরা কেউ কেউ একাধিকবারও ধর্ষন করে।
গত বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে সংঘঠিত ঘটনার পরপরই পুলিশ ব্যাপক অভিযান চালিয়ে জড়িতদের মধ্যে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন এলাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে ৭জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে স্বর্ন বিক্রয়ের টাকা, লুন্ঠিত টাকা, মোবাইল সেটসহ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র এবং একটি সিএনজি উদ্বার করা হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন জানান, এর সাথে রাজনৈতিক কোন সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, অপরাধীদের পরিচয় অপরাধীই। ঘটনার মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আসামীদের আটক ও ঘটনার ক্লু উদঘাটন করায় স্বস্থি প্রকাশ করেছেন পুলিশের ডিআইজি।
এদিকে পুলিশের হাতে আটক ধর্ষক ৭ ডাকাতকে রবিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেফতার ধর্ষকরা হলো- মো: আমিন (৪০), বেলাল হোসেন (২৩), ইকবাল হোসেন (২১), আব্দুল হালিম (২৮), শাহিন মিয়া (১৯), অন্তর (২০) ও আব্দুর রশিদ (৩৭)। এরা খাগড়াছড়ির রামগড়, গুইমারা, মাটিরাঙ্গা ও খাগড়াছড়ি সদরের বাসিন্দা।
খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রশিদ জানান, গ্রেফতার আসামীরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছে।
উল্লেখ্য যে, বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে জেলা সদরের বলপেইয়ে আদাম গ্রামে এক পাহাড়ির বাড়িতে দূর্ধর্ষ ডাকাতি সংগঠিত হয়। ডাকাতিকালে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই বাড়ির গৃহকর্তীর একমাত্র মেয়ে।
এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল সকালে বাংলাদেশ ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরাম ও মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল যৌথভাবে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে দোষীদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবী জানায় আন্দোলনকারীরা।
হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় ও খাগড়াছড়ি জেলা নেতারা নারী ধর্ষণ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।