করোনাকালীন সময়ে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় বিভিন্ন মোবাইল কোর্টে আটক কোন আসামীই আইনী সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন জেলার আইনজীবীরা। তাদের অভিযোগ- জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (জেলা প্রশাসক) প্রতাপ চন্দ্র বিশ^াস এর একগুয়েমির কারণে আসামীরা মানবাধিকার হারাচ্ছেন। তাদের মৌলিক অধিকার খর্ব হচ্ছে। জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (ডিএম) এর অসহযোগিতার কারণে খাগড়াছড়ি জজকোর্টের আইনজীবীরা তার অধিনস্ত নিজ আপীল আদালতসহ সকল নির্বাহী আদালতসমূহ অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার দুপুরে খাগড়াছড়ি বার এসোসিয়েশন কার্যালয়ে বারের সভাপতি এডভোকেট আশুতোষ চাকমার সভাপতিত্বে জরুরী সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। সভায় বারের সেক্রেটারি এড. আকতার উদ্দিন মামুন, সিনিয়র আইনজীবী এড. নাসির উদ্দিন আহমেদ, এড. রতন কুমার দে, এড. কামাল উদ্দিন মজুমদারসহ সকল আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে খাগড়াছড়ি জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের (জেলা প্রশাসক) অধিনস্ত নিজ আপীল আদালত, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত (এডিএম কোর্ট) এবং নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটদের সব আদালত অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জন করবেন আইনজীবীরা।
আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন, করোনাকালীন সময়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে যাদের জেল জরিমানা হয়েছে তাদের কারোর জন্যই আইনী লড়াই চালানো সম্ভব হয়নি। ফলে এমন বহু লোক বিনা বিচারে জেল খাটছেন। অনেকেই আইনী সহায়তা এবং ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।
খাগড়াছড়ি বারের সভাপতি এডভোকেট আশুতোষ চাকমা অভিযোগ করেছেন, জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট প্রতাপ চন্দ্র বিশ^াস সরকারি পরিপত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এতদিন ধরে ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনা থেকে বিরত ছিলেন। আপীল শুনানীও নেনি। বহু অনুরোধের পর গত ২৭ জুলাই থেকে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত শুরু করলেও শুনানী নিচ্ছেন না। পিটিশন মোভ করেননি। লম্বা তারিখ দিয়ে মামলা এডিএম কোর্টে বদলি করে দেন। এ নিয়ে সাক্ষাতে গেলে কোন কোন আইনজীবীর সঙ্গে দূর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সেক্রেটারি এডভোকেট আকতার উদ্দিন মামুন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, মূলত: সরকারি পরিপত্র অনুসরণ না করা, আসামীদের বিচার বঞ্চিত করা এবং মোবাইল কোর্টে আটক আসামীদের জন্য জামিনের আবেদন শুনানী না করে বিচারে প্রভাবিত করার কারণে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও তাঁর অধিনস্ত আদালতসমূহ বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (জেলা প্রশাসক) কে মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি জানিয়েছেন, আইনজীবিরা এই বিষয়ে আমার সাথে কোন যোগাযোগ করেনি ও জানায়ওনি। তবে তারা যদি এমন কোন কর্মসূচী হাতে নেয়,তবে এর কারণে সাধারন মানুষই সবচে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন আইন সহায়তা না পেয়ে।